আর্কাইভ থেকে দেশজুড়ে

সুনামগঞ্জের কয়েকটি ‘সড়ক যেন চাষের জমি’

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কয়েকটি সড়কের কাজ বন্ধ রাখায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ এলাকার জনসাধারণ ও যানবাহন চলাচলে প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।  মাসের পর মাস গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো খুঁড়াখুঁড়ি করে ও অর্ধেক কাজ করে লাপাত্তা সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদার।

সরজমিনের গিয়ে দেখা যায়, স্বজনশ্রী ভায়া হলিকোনা বাজারের সড়ক উন্নয়ন কাজে ঠিকাদারের স্বেচ্ছাচারিতায় যাতায়াতে জনসাধারণ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। প্রায় দুই বছর ধারে খুঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখায় এই সড়কটি চলতি বর্ষার মৌসুমে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এই সড়কে দিরাই ও জগন্নাথপুর উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার ধারে চলাচল করেন। হলিকোনা বাজার থেকে দিরাই উপজেলার আকিল শাহবাজার পর্যন্ত সড়কটি যেন চাষের জমি। জগন্নাথপুর উপজেলার স্বজনশ্রী, বাউধরন, মুজিব মার্কেট, হলি কোনা বাজার, খাগাউড়া, গুপরাপুর বাজার, দিরাই উপজেলার সুরিয়ার পাঁড়, আকিলশাহ বাজার, হাতিয়া, মার্কুলী বাজারের জনসাধারণ এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন।

খবর নিয়ে জানা যায়, ২০১৯ সালে প্রায় ৪ কোটি ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩ কিলোমিটার সড়কে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার আতিক। রাস্তার প্রায় অর্ধেক শেষ হলেও বিল বাকী থাকায় ১বছর আগে সড়কটি পরিত্যক্ত করে রাখা হয়েছে। সড়কটি বালি দিয়ে ভরাট করে রাখায় ছোট গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির মৌসুমে এসব গর্তে পানি জমে থাকায় গাড়ি চলাচল করতে পারে না। ভুক্তভোগী জনসাধারণের বক্তব্য এ রাস্তা দিয়ে সেজে গুঁজে চলাচল করলে পরে বাড়িতে গিয়ে গোসল করতে হয়। শিশু শিক্ষার্থী, বৃদ্ধ নারী পুরুষের জন্য সড়কটি বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর-পুরাতন আলা গদি সড়ক ঠিকাদার প্রায় এক কিলোমিটার খুঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এলাকার জনসাধারণ। সড়কটি দিয়ে ট্রাক, টেম্পু, অটোরিক্সা, এলাকায় যাতায়াত করে। সড়কটির এমন অবস্থায় মানুষের যেন কষ্টের শেষ নেই।

স্থানীয়রা জানান, বর্তমান সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী উন্নয়ন করলেও জগন্নাথপুর উপজেলার এইসব সড়কের দিকে তিনি নজর দিচ্ছেন না। উপজেলা প্রকৌশলীসহ জনপ্রতিনিধিদের নজরে আসলেও সড়কের দুরবস্থা লাঘবে কোনো পদক্ষেপ নেই। বারবার নিউজ হওয়ার পরও এই সড়কগুলো নিয়ে কারও মাথা ব্যথা নেই। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থাকলেও এই রাস্তার কথা ভোট শেষ হলেই কারও মনে থাকে না।

এ ব্যাপারে জানতে ঠিকাদার আতিকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমাদের তিন কিলোমিটার সড়কটির মধ্যে প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ করেছি। আমাদের টাকা পাইনি বলে কাজ শেষ করতে পারছি না। আশা করছি কিছু দিনের মধ্যে কাজ শুরু করতে পারবো।

এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানান, বন্যার আগে এ রাস্তার কাজ করা হয়েছিল। বন্যার পর থেকে কাজ থেমে গেছে। আমরা ঠিকাদারকে বারবার বলে যাচ্ছি কাজ শুরু করার জন্য এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন