আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কিং ব্যাক মোনেম মুন্নার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

বাংলাদেশ ও কলকাতার ফুটবলে ছিলেন সমান জনপ্রিয়। দেশের গণ্ডি ছাপিয়ে মোমেন মুন্না নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন ভিন্ন উচ্চতায়। কিন্তু বেশি দিন তা উপভোগ করার সুযোগ হয়নি প্রয়াত ডিফেন্ডারের। ২০০৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অকালে চলে গেলেন কিংবদন্তি ফুটবলার। কিডনি জটিলতার কাছে হার মানেন মাত্র ৩৮ বছর বয়সে।

প্রতিবছর ১২ ফেব্রুয়ারি দিনটি ভারক্রান্ত করে তোলে দেশের ফুটবল অঙ্গনকে। স্মরণ করা হয় প্রয়াত তারকাকে। আজ মোনেম মুন্নার ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটিকে নানাভাবে পালন করে থাকে বিভিন্ন সংগঠন। মতিঝিল ফুটবল ভবনে কোরআনখানি, মিলাদ ও দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে খাবার বিতরণ করে থাকে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। মুন্নার জন্মস্থান নারায়ণগঞ্জে মুন্না স্মৃতি সংসদ ও নারায়ণগঞ্জ সোনালী অতীত ক্লাবও স্মরণ করে দিনটি। 

দেশের ফুটবলে কিং ব্যাক খ্যাত, জাতীয় দল ও ঢাকা আবাহনীর সাবেক অধিনায়ক দেশসেরা ডিফেন্ডার ছিলেন মোনেম মুন্না। ১৯৮১ সালে পাইওনিয়ার ফুটবল লিগ দিয়ে মুন্নার ক্যারিয়ার শুরু। পরের বছর দ্বিতীয় বিভাগে শান্তিনগর ক্লাবের হয়ে খেলেন। ১৯৮৩ মুন্নাকে দলের ভেড়ানোর দ্বিতীয় বিভাগ লিগ চ্যাম্পিয়ন হয় সালে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়া চক্র। 

১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে ঢাকা প্রথম বিভাগ লিগে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের হয়ে খেলার পর ১৯৮৬ সালে এই লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে মাঠ মাতান কিং ব্যাক। এরপর ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত প্রথম বিভাগে ঢাকা আবাহনীর পক্ষে টানা খেলেন মুন্না। ১৯৯১ সালে ঢাকা লিগে ২০ লাখ টাকা পেয়ে এক মৌসুমে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়ার রেকর্ড গড়েন তিনি। কেবল বাংলাদেশের কোনো ফুটবলারেরই রেকর্ড পারিশ্রমিক নয়, উপমহাদেশেও এটা ছিল একটি আলোড়ন সৃষ্টিকারী খবর।

জাতীয় দলের অপরিহার্য ফুটবলার ছিলেন ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত। দেশসেরা ফুটবলার হিসেবে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ভারতের ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের পক্ষে কলকাতার মাঠ মাতিয়েছেন মুন্না। দিনে দিনে তিনি হয়ে ওঠেন তুমুল জনপ্রিয় এক ফুটবলার। খেলা ছেড়ে হয়েছেন আবাহনীর ম্যানেজার।

১৯৯৯ সালের রমজান মাসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান এই তারকা ফুটবলার। সেখানেই তার কিডনি সমস্যা ধরা পড়ে। ২০০৫ সালের ২৬ জানুয়ারি গুরুতর অসুস্থ হলে মুন্নাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রায় তিন সপ্তাহ মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ওই বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান দেশের ফুটবলের এই কৃতি সন্তান। 

জাতীয় দলের সাবেক কোচ অটো ফিস্টার একবার আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘হি ওয়াজ মিসটেকেইনলি বর্ন ইন বাংলাদেশ।’ ফিস্টার ভুল বলেননি, সুযোগ-সুবিধা পেলে হয়তো আরো অনেক দূর যেতেন জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক। মৃত্যুবার্ষিকীতে স্মৃতিচারণায় এ কথাগুলো ঘুরেফিরে আসে সবার মুখেই।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন