ইউক্রেনের বাজারে রুশ হামলা, নিহত ১৭
ইউক্রেনের দনেৎস্ক অঞ্চলের একটি বাজারে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বেসামরিক ১৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে এ অতর্কিত হামলা চালায় রাশিয়া। অন্যদিকে, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফরে রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানিয়েছিলেন, এ হামলায় ১৬ বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭ হয়েছে।
এদিন ঝটিকা সফরে কিয়েভে পৌঁছেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তার সফরের জন্যই রাশিয়া এই হামলা চালিয়েছে বলে কোনো কোনো কূটনীতিক মনে করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি লেখেন, ‘সন্ত্রাসী রাশিয়ার হামলায় বহু বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বহু মানুষ আহত। যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের কেউ দোকানে গিয়েছিলেন, কেউ ওষুধ কিনছিলেন। তাদের কারও কোনো দোষ ছিল না। রাশিয়াকে এর ফল ভুগতে হবে।’
একাধিক দেশ ও সংগঠন রাশিয়ার এই হামলার সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘের ইউক্রেন বিষয়ক কর্মকর্তা ডেনিস ব্রাউন বলেন, ‘অসংখ্য সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। নারী ও শিশুরা আহত হয়েছেন। মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ) এই হামলার প্রতিবাদ করেছে। মস্কো ইউক্রেনের সাধারণ মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলছে বলে অভিযোগ করেছে ইইউ। যারা এই আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত তাদের উচিত শিক্ষা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্সে লেখেন, ‘রাশিয়ার এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিকতার ওপর। জার্মানি ইউক্রেনের পাশে আছে।’
এদিকে, কিয়েভে পৌঁছে জেলেনস্কির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিঙ্কেন। পরে এক বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তিনি। দুই দিনের সফরে ইউক্রেন গেছেন ব্লিঙ্কেন। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার সফরের কথা কেউ জানত না।
যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ১৭৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করা হবে সামরিক খাতে। বিশেষ করে অ্যাব্রামস ট্যাংকের জন্য গোলা-বারুদ কেনা হবে। বাকি টাকার একটা বড় অংশ মানবিক কাজে ব্যবহার করা হবে।
যুক্তরাষ্ট্র আরও জানায়, ইউক্রেনকে ১২০ মিলিমিটারের কার্তুজ দেওয়া হবে ট্যাংকের জন্য। যে কার্তুজে ইউরেনিয়াম ডিপ্লেট করা থাকবে। এই কার্তুজ যেখানে ফাটবে সেখানে বাতাস বিষাক্ত হয়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এই ধরনের কার্তুজ ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক আছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণার পরেই রাশিয়া এর প্রতিবাদ করেছে। ওয়াশিংটনে রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে একটি কড়া বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র কেবল ইউক্রেনকে সাহায্য করছে, তা-ই নয়, রাশিয়ার একটি গোটা প্রজন্মকে খতম করার চেষ্টা করছে।