টেলিস্কোপ ছাড়াই দেখা যাবে নিশিমুরা ধূমকেতু
৪৩৭ বছর পর আরো একবার পৃথিবীর কাছাকাছি চলে এসেছে ধূমকেতু ‘নিশিমুরা’ । মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) খালি চোখেই দেখা যাবে এ বৃহৎ ধূমকেতু। যা সচরাচর দেখা যায় না। এ জন্য প্রয়োজন হবে না টেলিস্কোপের।
চলতি বছরের ১১ আগস্ট প্রথমবারের মতো এ ধূমকেতুর সন্ধান পান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এ ধূমকেতুটি আবিষ্কার করেছিলেন জ্যোতির্বিদ হিডিও নিশিমুরা। তার নামেই এটির নামকরণ করা হয়।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মতে, নিশিমুরা ধূমকেতু শিগগিরই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করবে এবং এ সময়ে এটি পৃথিবীর কাছাকাছিও আসবে। পরে তা চলে যাবে দূর মহাকাশে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এ ধূমকেতুটি আবার ৪৩৭ বছর পর পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে। যা দেখা যাবে সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। যখন কাছে আসবে, তখন সেটি দেখতে টেলিস্কোপের প্রয়োজন হবে না।
আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর সূর্যের সবচেয়ে কাছে আসবে নিশিমুরা। এর আগে ধুমকেতুটি ১৩ সেপ্টেম্বর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি আসাসহ ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেখা যাবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, নিশিমুরা ধূমকেতুর কক্ষপথের সময়কাল ৪৩৭ বছর। মঙ্গলবারের পর এ ধূমকেতুটি আবার ৪৩৭ বছর পর পৃথিবীর কাছাকাছি আসবে।
রাত যত গভীর ও অন্ধকার হবে, নিশিমুরা ধূমকেতু দেখার সম্ভাবনা তত বেড়ে যাবে। প্রতি ঘণ্টায় ২৪০,০০০ মাইল গতিতে চলমান এ ধূমকেতু সৌরজগৎ ছেড়ে গেলে আবার ফিরতে ৪৩৭ বছর সময় লাগবে।
বুধবারের পর উত্তর গোলার্ধ থেকে ধূমকেতুটি অদৃশ্য হয়ে যাবে। এটি সূর্যের কাছে চলে যাবে ১৭ সেপ্টেম্বর। সূর্যের কাছাকাছি গিয়ে ভেঙেও যেতে পারে এটি। তবে এটি অক্ষত থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে সৌরজগৎ ছেড়ে চলে যাবে নিশিমুরা। এর আগে সেপ্টেম্বরের শেষে এটি দক্ষিণ গোলার্ধে দৃশ্যমান হতে পারে।
ধূমকেতু নিয়ে মানুষের কৌতূহল ও বিস্ময়বোধ প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরোনো। প্রাচীনকালে ধূমকেতু নিয়ে মানুষের ধারণা ছিল পৃথিবীর আকাশে ধূমকেতু দুর্ভিক্ষ, মহামারি যুদ্ধবিগ্রহ ইত্যাদি সাথে করে নিয়ে আসে।
সৌরজগতের এক বিচিত্র বস্তু হল ধূমকেতু। মধ্যযুগ অবধি মানুষ বুঝতেই পারেনি ধুমকেতুর ব্যাপারটি কি। ইংরেজিতে ধূমকেতুকে বলে কমেট।
ঝাঁকড়া চুলকে গ্রিক ভাষায় বলে ‘কমেটিজ’। তার সাথে এর রূপের সাদৃশ্য মিলিয়ে নামকরণ করা হয়েছে ‘কমেট’। বাংলায় একে বলে ‘ধোঁয়ার নিশান’, আবার অনেকে একে ‘ঝাঁটা তারা’ বলে।
ধূমকেতু হল হিমায়িত গ্যাস, শিলা এবং ধূলিকণার বরফের দেহ। বিজ্ঞানীরা কখনও কখনও ধূমকেতুকে নোংরা তুষার বল বা তুষারময় ময়লা বল বলেন।