১৫ দিন পর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা শুরু
বৈরী আবহাওয়ায় ১৫ দিন বন্ধ থাকার পর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধারা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজারের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ট্রলার সাগরে মাছ ধরতে গেছে। জানিয়েছেন জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহমদ।
শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছেন।
মোস্তাক আহমদ জানান, কক্সবাজারে ছোট-বড় প্রায় সাত হাজার যান্ত্রিক নৌযান সাগরে মাছ ধরে। এর মধ্যে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রায় এক তৃতীয়াংশ ট্রলারই সাগরে মাছ ধরতে গেছে। বাকি ট্রলারগুলোও রোববার-সোমবারের মধ্যে সাগরে মাছ ধরতে যাবে।
তিনি জানান, ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা জুলাই মাসের ২৩ তারিখ শেষ হলেও সাগর উত্তাল থাকায় ওই মাসে সাগরে মাছ ধরতে পারেনি জেলেরা। এরপর আগস্ট মাসজুড়ে মোটামুটি নিয়মিত সাগরে আসা-যাওয়া সম্ভব হলেও ওই মাসের শেষদিকে আবারও সাগর উত্তাল হয়ে ওঠে। ফলে মাছ না ধরেই ফিরে আসতে হয় জেলেদের। কিন্তু পক্ষকালের বেশি সময় পর শনিবার থেকে সাগরের আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে এলে জেলেরা মাছ ধরা জন্য আবারও সাগরে যেতে শুরু করেছে।
জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতির মতে, সাগরে মাছ ধরার জন্য বিভিন্ন আকারের বোট রয়েছে। এর মধ্যে বড় বোটে ৩০-৪০ জন এবং ছোট বোটে ৫-১৭ জন জেলে থাকে। আবার কক্সবাজার শহরতলীর দরিয়ানগর ঘাটের ইঞ্জিনবিহীন ককশিটের বোটে থাকে মাত্র দুজন জেলে। ট্রলারগুলোর মধ্যে ইলিশ জালের বোটগুলো গভীর বঙ্গোপসাগরে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো উপকূলের কাছাকাছি মাছ ধরে। যে কারণে ইলিশ জালের বোটগুলো পক্ষকালের রসদ নিয়ে এবং বিহিন্দি জালের বোটগুলো সাগরে মাত্র একদিনের রসদ নিয়ে মাছ ধরতে যায়। বিহিন্দি জালে ইলিশ ব্যতীত ছোট আকারের প্রায় পাঁচ প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে, যাকে স্থানীয় ভাষায় ‘পাঁচকাড়া’ (পাঁচ প্রকারের) মাছ বলা হয়। কক্সবাজার জেলার লক্ষাধিক জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ী প্রত্যক্ষভাবে সাগরে মাছধরা পেশার ওপর নির্ভরশীল।
এদিকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হওয়ায় শনিবার থেকে শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণকেন্দ্র ফিশারি ঘাটসহ শহর ও শহরের বাইরের জেলেপল্লিগুলোতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে বলে জানান ফিশারিঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির সভাপতি জয়বাল আবেদীন হাজারি।
তিনি জানান, মাছ ধরার ওপর ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞার কারণে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র প্রতিবছর আড়াই মাসের কাছাকাছি বন্ধ থাকে। সাগরে মাছ ধরা শুরু হলে এক সপ্তাহ থেকে পক্ষকাল পরই ট্রলারগুলো মাছ ধরে মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পৌঁছে। আর এবার মাছ ধরা শুরু হয়েছে নিষেধাজ্ঞা অতিবাহিত হওয়ারও ৮-১০ দিন পর। তার মানে এবার প্রায় তিন মাসের কাছাকাছি মাছের বিকিকিনি বন্ধ। আবার অক্টোবরের বন্ধে আরও এক মাস মিলে প্রতি বছর চার মাস সময় বন্ধ থাকছে মৎস্য ব্যবসা।