অনলাইনে জুয়ার মাধ্যমে ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্র গ্রেপ্তার
অনলাইনে জুয়া (বেটিং) চক্রের বাংলাদেশ অঞ্চলের দুই মাস্টার এজেন্টসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দারা। গেলো ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- তরিকুল ইসলাম ওরফে বাবু (২৮), রানা হামিদ (২৬) ও তাদের সহযোগী সুমন মিয়া (২৫)। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, নগদ ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা, চারটি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি অ্যাকাউন্টের চেক বই ও ২৩টি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
আজ বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) এ কে এস হাফিজ আক্তার জানান, গ্রেফতারকৃতরা জুয়ার মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, তরিকুল ও রানা অনলাইন জুয়া (বেটিং) সাইটগুলোর মাস্টার এজেন্ট হিসেবে দেশের বাইরে থাকা সুপার এজেন্টের কাছ থেকে প্রতিটি পিবিইউ (ভার্চুয়াল কারেন্সি) ৬০ টাকার বিনিময়ে কিনতো। পরে সাইটগুলোর ব্যবহারকারীদের কাছে প্রতিটি পিবিইউ ১৫০ টাকার বিনিময়ে ও লোকাল এজেন্টের কাছে প্রতিটি পিবিইউ ১০০ টাকায় বিক্রি করতো। তরিকুল ও রানা ৮-১০ লাখ টাকার বিনিময়ে লোকাল এজেন্ট নিয়োগ করে পিবিইউ কারেন্সিতে দিতেন। পরে লোকাল এজেন্ট তার ব্যবহারকারীদের কাছে ১৫০ টাকা বিনিময়ে বিক্রি করতেন।
তিনি আরো জানান, এ চক্রের সদস্য প্রায় ৫০-৬০ জন। জুয়া পরিচালনার অর্থ লেনদেন করা হতো রকেট, নগদ ও বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিয়ের মাধ্যমে। তারা মোবাইল ফোনসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলার সাইট পরিচালনা করতো। বেটিং সাইট থেকে অবৈধভাবে আয় করা অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি, গাড়িসহ বিভিন্ন সম্পদ গড়ে তুলেছে তারা। পুলিশ ধারণা করছে গ্রেফতারকৃতরা এখন পর্যন্ত ৩০-৩৫ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে।
ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, অনলাইন জুয়ার (বেটিং) সাইটের অ্যাডমিনরা সাধারণত রাশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের। দেশে থাকা মাস্টার এজেন্টরা তাদের কাছ থেকে পিবিইউ নিয়ে খেলা পরিচালনা করে থাকে।
অনলাইন জুয়া বন্ধে পারিবারিক সচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, অনলাইন জুয়া সাইট বিটিআরসি বন্ধ করেছে।একমাত্র পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমেই এই জুয়া বন্ধ করা সম্ভব।