আর্কাইভ থেকে ফিচার

অর্থ আয়ের দ্বার খুলছে ‘ফেসবুক রিলস’

ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এখন সর্বোচ্চ ৬০ সেকেন্ডের ভিডিও বিনিময় করতে পারবেন। এমনকি ভিডিও নির্মাতারা চাইলে নিজেরাই ভিডিওর নিচে স্টিকার বিজ্ঞাপন দেখিয়ে সরাসরি আয় করতে পারবেন ফেসবুক থেকে। জানিয়েছে ফেসবুকের নিজস্ব ওয়েবসাইট মেটা।

টিকটক, ইউটিউব শর্টসের মতো প্রতিযোগিতার প্রভাব কমাতেই ফেসবুক এবার নিয়ে এসেছে নতুন ফিচার ‘ফেসবুক রিলস’।

এর মাধ্যমে ক্লিক করে ভিডিও বিনিময়ের পাশাপাশি অন্যের রিলস ভিডিওগুলোও দেখা যাবে। ভিডিওতে ব্যানার ও স্টিকার বিজ্ঞাপন দেখাবে ফেসবুক। বিজ্ঞাপনের আয় থেকে ভিডিও নির্মাতাদের অর্থও দেবে মেটা। ফেসবুকের নিউজফিডের ওপরে লাইভ, রুম, গ্রুপের পাশেই দেখা মিলবে এই নতুন ফিচারের। এটি দিয়ে অন্যের তৈরি ভিডিওর সমন্বয়ে নতুন ভিডিও তৈরির সুযোগ রয়েছে। এখন নিজেদের তৈরি ভিডিও রিলসের পাশাপাশি স্টোরিজ ও ওয়াচ ফিচারেও বিনিময় করতে পারবেন নির্মাতারা।

টিকটকের আদলে ছোট ভিডিও বিনিময়ের সুযোগ দিয়ে বিশ্বব্যাপী রিলস ফিচার চালুর ঘোষণা দিয়েছে ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ্বের ১৫০টি দেশে এ সুবিধা ভোগ করার সুযোগ থাকেবে।

মার্ক জাকারবার্গ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত এবং জনপ্রিয় একজন মানুষ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ফেসবুকে’র প্রতিষ্ঠাতা ও জনক তিনি। যার বদৌলতে হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষটিকে খুঁজে পাওয়া যায় মুহূর্তেই। ফেসবুক ব্যবহার করছেন না এমন মানুষ হাতে গোনা কয়েকজন।

তবে এবার দীর্ঘ ১৮ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ফেসবুকে সক্রিয় গ্রাহকের সংখ্যা কমেছে। ২০২১’র অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শেষ তিন মাসে ফেসবুকের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৯২ কোটি ৯০ লাখ। এর আগের তিনমাসে এ সংখ্যা ছিল ১৯৩ কোটি। অর্থাৎ ওই ৩ মাসে ১০ লাখ ব্যবহারকারী হারায় ফেসবুক। যার মূল কারণ হলো ব্যবহারকারীরা ফেসবুকের চেয়ে টিকটক এবং ইউটিউবে  ভিডিও কনটেন্টে বেশি সময় ব্যয় করছেন।

ছোট আকারের ভিডিও তৈরি ও বিনিময়ের সুযোগ থাকায় অল্প সময়ের মধ্যেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে টিকটক। মার্ক জাকারবার্গ এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ফেসবুকেও চালু করেছেন রিলস সুবিধা। যার উদ্দেশ্য হলো টিকটক, ইউটিউব শর্টসের মতো প্রতিযোগীতের প্রভাব হ্রাস।

২০২০ সালে নিজেদের মালিকানাধীন ছবি ও ভিডিও বিনিময়ের নেটওয়ার্কিং সেবা ইনস্টাগ্রামে রিলস ফিচার চালু করে মেটা। গেলো বছর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কিছু দেশে ফেসবুকের জন্য ফিচারটি চালু করা হয়। এবার বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে ফিচারটি ব্যবহারের সুযোগ মিলবে। মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ ফেসবুক বার্তায় জানান, রিলস এরই মধ্যে তাদের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল কনটেন্ট ফরম্যাট, যা বিশ্বজুড়ে সব ব্যবহারকারীর জন্য সহজলভ্য করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, আজকের ফেসবুকের পথ চলা শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালের ২৮ অক্টোবর ‘ফেসম্যাশ ডট কম’ নামের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে। জনপ্রিয়তা লাভের আশায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাটাবেজ হ্যাক করে শিক্ষার্থীদের ছবি ব্যবহার করে ভিজিটরদের 'হট' অথবা 'নট' ভোটের ফন্দি করেছিলেন মার্ক জাকারবার্গ। পরবর্তীতে বিতর্কের মুখে পরে বাধ্য হয়েই বন্ধ করে দেন ওয়েবসাইটটি। এরপর ২০০৪ সালে আবার নতুন আঙ্গিকে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র অ্যাডওয়ার্ডো সেভারিন, জাস্টিন মস্কোভিজ এবং ক্রিস হিউজেসের সহযোগিতায় মার্ক জাকারবার্গ তৈরি করেন দ্য ফেসবুক। যা বর্তমানে ফেসবুক নামে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। 

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন