আর্কাইভ থেকে করোনা ভাইরাস

দেশে করোনার এক বছর আজ

৮ মার্চ ২০২০ আজকের এই দিনে বাংলাদেশে প্রথম তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। 

প্রথম শনাক্তের ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে প্রথম মৃত্যু ঘটে রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগে। এরপর থেকেই প্রতিদিন শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

রাজধানীর টোলারবাগের যে বাড়ি থেকে শুরু করোনার মৃত্যুর মিছিল। সেসব দিন মনে হলে এখনো আতঙ্কে জমে যান এখানকার মানুষ। দুঃসহ স্মৃতি কিছুটা মলিন হলেও বেদনা কি ভুলতে পেরেছেন তারা?

ভাইরাসটিতে গত বছরের জুলাইয়ে সর্বোচ্চ সংক্রমণ ছিল। ২ জুলাই একদিনে চার হাজার ১৯ জন আক্রান্ত হন। আর জুন মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু ছিল। ৩০ জুন একদিনে সর্বাধিক মৃত্যুর রেকর্ড হয় ৬৪ জন।

৮ মার্চ ২০২১ (সোমবার) দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গত এক বছরের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে একমাত্র আইইডিসিআর ছাড়া করোনা পরীক্ষার জন্য আর কোথাও আরটি-পিসিআর ল্যাবরেটরি ছিল না। বর্তমানে দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২১৯টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে আরটি-পিসিআর ল্যাব ১১৮টি, জিন-এক্সপার্ট ২৯টি, র‌্যাপিড অ্যান্টিজেন ৭২টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪১ লাখ ৩২ হাজার ২১৩টি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে এখনো প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। ৭ মার্চ সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৪ হাজার ৫৪টি। পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৯২ জনের। নতুন শনাক্ত হয়েছে ৬০৫ জন এবং সুস্থ হয়েছে এক হাজার ৩৭ জন। আর মারা গেছেন ১১ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সূত্র মতে, দেশে এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ছয় লাখ ৩০ হাজার ৯৮৫ জন। ছাড়পত্র নিয়েছেন পাঁচ লাখ ৯৯ হাজার ১৮৫ জন। পাশাপাশি এ পর্যন্ত আইসোলেশনে এসেছেন ১ লাখ ৯০৫ জন। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন ৯১ হাজার ১৯১ জন। বর্তমানে আছেন নয় হাজার ৭১৪ জন।

তবে সবকিছু ছাপিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নেতৃত্ব এবং নির্দেশনায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই দেশ আবার স্বাভাবিক পরিবেশে ফিরে আসতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চলতি বছরের গত ২০ জানুয়ারি দেশে করোনা ভাইরাসের টিকাও এসেছে। ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ওই টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে টিকা কার্যক্রম শুরু হয়। করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারকে এরই মধ্যে সাফল্যের কৃতিত্ব দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে জাতিসংঘ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আরও একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, চলমান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমে ব্যবহৃত কোভশিল্ড ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নেওয়ার ন্যূনতম ২ সপ্তাহ পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ সক্ষমতা তৈরি হয়। তাই এই সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে করোনায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। সুতরাং ভ্যাকসিন নেওয়ার পূর্বে এবং পরেও মাস্ক ব্যবহারসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন