আর্কাইভ থেকে আইন-বিচার

হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড, তিনজনের যাবজ্জীবন

বরিশালের বাকেরগঞ্জে মোটরসাইকেল চালক ফয়সাল আহমেদ প্রিন্স (২৬) হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্তদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এই ঘটনার এক আসামি সৈয়দ মৃধা খলিলকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৯ অক্টোবর) সকালে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম রাশেদুজ্জামান রাজা এই দণ্ড প্রদান করেন। এই তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওবায়েদ উল্লাহ সাজু। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্তরা এজলাসে উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম রাসেল হাওলাদার (৩০)। সে বরগুনা সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মাইঠা চেয়ারম্যান বাজার এলাকার সালাম হাওলাদারের ছেলে।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন একই গ্রামের আব্দুল মজিদ বয়াতির ছেলে বেল্লাল হোসেন (৩৩), মৃত রুহুল আমিন বয়াতির ছেলে শাহিন মিয়া (৩২) ও সানু হাওলাদারের ছেলে ইদ্রিস হাওলাদার (৩০)। খালাস পাওয়া সৈয়দ মৃধা খলিল (৩০) একই গ্রামের আব্দুল লতিফ মৃধার ছেলে। ফয়সাল আহম্মেদ বাকেরগঞ্জ উপজেলার খয়রাবাদ গ্রামের নুরুল ইসলাম হাওলাদারের ছেলে।

মামলার বরাতে পিপি এড সাজু জানান, দণ্ডিতরা ২০১৯ সালের ৪ মার্চ উপজেলার বালিগ্রামে শহিদুল ইসলামের বাড়ীতে গভীর নলকুপ স্থাপন করতে আসে। পরদিন ৫ মার্চ রাত সাড়ে ১১টার দিকে দিকে বালিগ্রামের সড়কে ভাড়ার মোটর সাইকেল চালক ফয়সাল আহমেদ প্রিন্সকে একা পায় তারা।

তখন ফয়সালের পথরোধ গভীর নলকূপ স্থাপনের পাইপ বসানোর লোহার হ্যান্ডেল ও রড দিয়ে মাথায়-মুখমন্ডলে সজোরে আঘাত করে। এরপর গলায় রশি দিয়ে ফাঁস দিয়ে ফয়সালকে হত্যা করে পাশের ইউসুফ হাওলাদারের দোকানের পিছনে লাশ লুকিয়ে রাখে। পরে ফয়সালের মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটর সাইকেল নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে লুট করা মোবাইল ফোন, টাকা ও মোটর সাইকেলের ভাগবাটোয়ারা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে।

গৃহকর্তা শহিদুল এসে মারামারি থামানোর সময় মোবাইল ফোনে ফয়সালের ছবি দেখতে যায়। পরে শহিদুলের ঘরে পিছনে মোটর সাইকেল পেয়ে ফয়সালের বাবা নুরুল ইসলামকে খবর দেয়। তিনি এসে মোটর সাইকেলটি শনাক্ত করে।

তখন ৪ জনকে আটক গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। তখন তারা ফয়সালকে হত্যা করে লাশ লুকিয়ে ফেলার কথা স্বীকার করে। ভোর রাতে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে ৬ মার্চ সকালে আসামিদের দেখানো স্থান থেকে ফয়সালের লাশ উদ্ধার করে।

এই ঘটনায় ওই দিন ফয়সালের বাবা নুরুল ইসলাম বাদী হয়ে নামধারী ৫ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনকে আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করে। বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক নকীব আকরাম হোসেন ৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশীট) জমা দেয়। বিচারক ২৮ জনের মধ্যে ১৩ জনের স্বাক্ষ্য নিয়ে রায় দিয়েছেন। এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাদী নরুল ইসলাম।

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন