দেশে ৮-১৩ শতাংশ গর্ভবতী নারী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত
বাংলাদেশে গর্ভবতী নারীদের ৮ থেকে ১৩ শতাংশ গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ফাউন্ডেশনের গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। জীবনযাত্রা, কায়িক শ্রম না করা, খাদ্যাভাসের কারণে বাড়ছে এ রোগ। এতে সময়ের আগেই প্রসব, এমনকি মৃত সন্তান জন্ম দেয়াসহ নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে।
গর্ভবতীর পাশাপাশি ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে শিশুরাও। মায়ের ডায়াবেটিস বেশি হলে, টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে গর্ভের সন্তানও। তাই সন্তান নেয়ার ৩ মাস আগে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ চিকিৎসকদের।
এ বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান ডা. ফাহমিদা নাজ মুস্তাফা বলেন, যিনি প্রেগন্যান্সি নিয়ে চিন্তা করছেন তার কিন্তু আগেই ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে নেয়া উচিত। যদি দেখা যায় সে ডায়াবেটিক তাহলে অন্তত দুই থেকে তিন সপ্তাহ তাকে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তারপর প্রেগন্যান্ট হতে হবে।
ডায়াবেটিস আক্রান্ত নারীর গর্ভধারণের পরিকল্পনার আগেই তা নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। নিয়ন্ত্রণে না আনা হলে, গর্ভের সন্তানের হৃদপিন্ড ও শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা হতে পারে। অন্যদিকে, গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হলে গর্ভের সন্তানের ওজন বেড়ে যায়। জটিলতা দেখা দিতে পারে প্রসবের সময়। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়ন্ত্রিত খাবার গ্রহণ এবং শরীরচর্চার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
ডা. ফাহমিদা নাজ আরও বলেন, ডায়াবেটিসের কারণে মায়ের জরায়ুতে পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, শেষের দিকে গিয়ে বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়া এমনকি জরায়ুতেই বাচ্চা মারা যেতে পারে।
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সারওয়াত জাহান জোবায়রা বলেন, এমনটি হলে আমরা নরমাল ভেলিভারিতে যেতে পারি না। আমাদের একটা ভয় থাকে। মা যদি ডায়াবেটিক হয় তাহলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাচ্চার টাইপ-১ ডায়াবেটিস হতে পারে। যদিও এই সংখ্যা খুব কম।
তিনি আরও বলেন, ডেলিভারির পর মা যেমন যত্ন পায়, একই যত্ন শিশুরও পাওয়া জরুরি। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা শিশুকে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। কোনো কারণে বাচ্চার সুগার কমে গেলে তাকে অনেক সময় বাঁচানো নাও যেতে পারে।