আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

আফ্রিকায় ভিন্ন বাংলাদেশকে দেখা যাবে : ডোমিঙ্গো

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ  শুক্রবার (১৮মার্চ)। ঢাকার সময় বিকেল পাঁচটায় সেঞ্চুরিয়নে শুরু হবে সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ। বাংলাদেশের কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলেছেন, তার অধীনে বাংলাদেশ দল, ‘এমন কিছু করবে যা আগে কখনো হয়নি।’

কারণ প্রায় ২০ বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। তারপর এখন পর্যন্ত কোনো ফরম্যাটের ম্যাচেই জয় পায়নি টাইগাররা। এখনো পর্যন্ত ওয়ানডে ফরম্যাটে মুখোমুখি ২২ দেখায় দক্ষিণ আফ্রিকা ১৭টি ম্যাচে জিতেছে, একটিতে কোনো ফলাফল আসেনি। বাংলাদেশ চারটিতে জিতেছে, কিন্তু কোনোটিই দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে নয়।

দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো ২০১৯ সালে বাংলাদেশের হেড কোচের দায়িত্ব নিয়েছেন, এরপর এই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গেল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।

ডোমিঙ্গো চার বছর দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলের কোচ ছিলেন, তবে সেই দক্ষিণ আফ্রিকা আর বর্তমান স্কোয়াডের মধ্যে অনেক পার্থক্য, তখন মনে করা হতো দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে যে কোনও কন্ডিশনে যে কোনও ম্যাচ জেতার ক্ষমতা রাখতো, যেখানে খেলতেন এ বি ডি ভিলিয়ার্স, ডেল স্টেইন, ফ্যাফ ডু প্লেসির মতো ক্রিকেটাররা। আর এই দক্ষিণ আফ্রিকা এখন একটা পুর্নগঠনের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে, এখনো অনেক পরীক্ষা দেয়া বাকি আছে এই দলটার।

তাই এটাকে একটা সুযোগ হিসেবেও নিতে চান বাংলাদেশের কোচ হিসেবে প্রথমবার দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করতে যাওয়া ডমিঙ্গো।

খেলোয়াড়রাও বলছেন জয়ের কথা। বছরের শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গুইয়ে টেস্ট জয়কে অনুপ্রেরণা মানছেন অনেকেই, এই একটা জয় বাংলাদেশের স্কোয়াডকে বাড়তি প্রেরণা দেবে।

তখন মুমিনুল হকও ম্যাচ জয়ের পর বলেছিলেন, ‘আগে যদি বলতাম নিউজিল্যান্ডে আমরা টেস্ট জিতবো অনেকেই হাসতেন। কিন্তু এখন আর হাসবে না।’ তামিম ইকবাল অবশ্য সরাসরি জয়ের কথা বলেননি। কিন্তু তিনি মনে করেন এখন শুধু ভালো খেলা বাংলাদেশ দলের লক্ষ্য হতে পারেনা।

দেশ ছাড়ার আগে একটি সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম বলেছিলেন, ‘দশ বছর আগে যদি প্রশ্ন করতেন বলতাম ভালো খেলতে চাই। কিন্তু এখন সেটা কঠিন। এখন আমাদের ম্যাচ জেতা ছাড়া ভালো খেলেছি এটা বলাও কঠিন।’

সাকিব আল হাসানও নানা পর্বের নাটকীয়তা শেষে দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছেছেন। অন্তত একটা ওয়ানডে জেতা উচিত বাংলাদেশের। বাংলাদেশ ২২ বছর ধরে টেস্ট এবং ছোট ফরম্যাট শুরু হওয়ার পর থেকে টি-টোয়েন্টি খেললেও এখনও পর্যন্ত পরিসংখ্যান ও আনুকূল্য সব মিলিয়েই দলটির প্রিয় ফরম্যাট ওয়ানডে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ গত পাঁচ-সাত বছরে বিশ্বের যে কোনও দলকেই হারাতে পারে এবং সেটা করেও দেখিয়েছে বাংলাদেশ, এক্ষেত্রে কন্ডিশন বা উইকেট তেমন কোনও প্রভাব ফেলেনি, এই ২০১৯ সালেও তুলনামূলক বৈরি কন্ডিশনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বিশ্বকাপে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

এর আগে ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রভিডেন্সে জ্যাক ক্যালিস, গ্রায়েম স্মিথ, এবি ডি ভিলিয়ার্সের দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশের কাছে ৬৭ রানে হেরে গিয়েছিলো। এসব স্মৃতি যেমন বাংলাদেশের এই স্কোয়াডের অনেককেই আশা জোগাবে। একই সাথে এসব জয়ের কোনওটিই যে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে নয়, এই তথ্য বাংলাদেশের জন্য খানিকটা অস্বস্তিরও।

দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যালান ডোনাল্ড, অ্যালবি মর্কেলও আছেন সাকিব-তামিমদের সাথে। সাকিব-তামিমদের মত সিনিয়র প্লেয়াররা সেই অস্বস্তি কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ক্যারিয়ারের অন্তত একটা জয় চাইবেন সেটাই স্বাভাবিক।

২০২০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতেছিলো বাংলাদেশ যুব ক্রিকেট দল। এই দলের গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার শরিফুল ইসলাম এখন বাংলাদেশের নিয়মিত ফাস্ট বোলার হিসেবেই একাদশে খেলেন। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডার অ্যালবি এই আসরে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের পাওয়ার হিটিং কোচের দায়িত্ব পালন করছেন।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের পরে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকা ও বাংলাদেশ, সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার পূর্ণশক্তির স্কোয়াড থাকছে না। ওয়ানডে সিরিজ খেলেই মূল দলের ৮ থেকে ১০জন ক্রিকেটার ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলতে ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা হবে।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন