আর্কাইভ থেকে এশিয়া

মিয়ানমারের তেল-গ্যাস প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

মিয়ানমারের সরকারি মালিকানাভুক্ত মিয়ানমা অয়েল এন্ড গ্যাস ইন্টারপ্রাইজের (এমওজিই) উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি দপ্তরের দেয়া এক বিবৃতি অনুযায়ী, মিয়ানমারের শাসক জান্তার সম্প্রসারণ থামানোর লক্ষ্যে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বুধবার (১ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এমওজিই হচ্ছে সামরিক সরকারের আয়ের প্রধান উৎস। মিয়ানমারের সরকার বিদেশ থেকে সামরিক অস্ত্রশস্ত্র ও সাজসরঞ্জাম কেনার জন্য সেই অর্থ ব্যবহার করেছে। এই ব্যবস্থায় আমেরিকানদের জন্য ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক পরিষেবা সংক্রান্ত সমস্ত তৎপরতা যেমন তেল ও গ্যাস প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঋণ, হিসাব, বীমা, বিনিয়োগ ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞায় পুরোপুরিভাবে এমওজিইকে ব্লক করা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্র এই নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কানাডা ও ব্রিটেনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলবে যাতে এই তিনটি দেশকে একই সুত্রে আনা যায় এবং মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের বিরুদ্ধে আরও ব্যবস্থা নেয়া যায়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন এক বিবৃতিতে বলেন, 'আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই আহ্বান জানাচ্ছি যে বার্মায় ক্রম-অবনতিশীল মানবাধিকার, মানবিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকট মোচনে তারা যেন তাদের তৎপরতা আরো বৃদ্ধি করে।'

২০২১ সালে সামরিক অভূত্থানের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে এমওজিইর উপর কড়া নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো চাপ দিয়ে আসছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো মানবাধিকার লংঘনের জন্য বর্তমান মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমের অন্যান্য দেশ জান্তার ক্ষমতা কমাতে বেশ কয়েক দফায় বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

এর আগে গেলো জুনে মুদ্রা বিনিময়ের জন্য মিয়ানমার অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজসহ রাজস্ব উৎপাদনকারী রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংককে নিষেধাজ্ঞা দেয় ওয়াশিংটন।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে ব্যাপক অস্থিরতা চলছে। দেশটির সংখ্যালঘু জাতিগুলোর বিদ্রোহী সশস্ত্র বাহিনীগুলো ও দেশটির বিরোধীদলের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ আন্দোলন সামরিক বাহিনীকে ক্ষমতা থেকে হটানোর চেষ্টায় লড়াই করে চলছে।

এসব লড়াইয়ে বহু লোক হতাহত হওয়ার পাশাপাশি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জাতিসংঘ জানিয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন