আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

জাতীয় গণহত্যা দিবস আজ

আজ ভয়াল ২৫ মার্চ। যা বাঙালির ইতিহাসের কালরাত। সেই সাথে মানব সভ্যতার ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায়। এই দিন রাতে পাকিস্তানের বর্বর হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হিংস্র দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে গণহত্যাযজ্ঞ শুরু করে। দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৭০ এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা টালবাহানা শুরু করে। বৈঠকের মাধ্যমে কালক্ষেপণ করে নিরস্ত্র বাঙালি নিধনের গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় তারা। এই পরিস্থতিতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ২ মার্চ অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন এবং ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দেন। ১৫ মার্চ থেকে ৩৫ দফা নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানান তিনি।

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশ সারা বাংলায় অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। পূর্ব বাংলায় বেসামরিক শাসন ব্যবস্থা পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়লে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুকে বারবার সমঝোতার প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু এ দেশের স্বাধীনতার পক্ষে অটল থাকলে ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ এর নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে চালায় বিশ্ব ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যা। ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ ছিল বাঙালির একটি প্রজন্মকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার এক নারকীয় পরিকল্পনা।

২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরোচিত ও নৃশংস গণহত্যার ঘটনার স্মরণে ২০১৭ সালের ১১ মার্চ মহান জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি প্রতিরোধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে নারকীয় ও বর্বরোচিত এই হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে অবহিত করে গণহত্যাকারী ও তার দোসরদের প্রকৃত পরিচয় তুলে ধরা হচ্ছে। পাশাপাশি বাঙালি জাতি ২৫ মার্চের কালরাতে নিহত সকল শহীদসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ শহীদ ও সম্ভ্রমহারা ২ লাখ মা-বোনকে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে।

মির্জা রুমন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন