আর্কাইভ থেকে আওয়ামী লীগ

বঙ্গবন্ধুর দেখা স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধের পর স্বাধীন দেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে আমাদের কণ্ঠকে স্তব্ধ করার প্রক্রিয়া চলছিল। বঙ্গবন্ধু শাহাদাত বরণের পর তার যোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আজ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। নতুন প্রজন্ম আজ মন খুলে আঁকতে পারছে, মনের ভাষা প্রকাশ করছে ছবি এঁকে। বীরের জাতি হিসেবে নতুন প্রজন্ম যেন মাথা উঁচু করে চলতে পারে।

শনিবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও মুজিববর্ষ স্মারকগ্রন্থ ‘অনশ্বর পিতা’র মোড়ক উন্মোচন ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খুব কাছ থেকে আমি বঙ্গবন্ধুকে দেখেছি। তখন আমি ডিগ্রি ফাইনাল বর্ষের ছাত্র। আমি উদগ্রীব থাকতাম কখন তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেবেন।’

এ বীর মুক্তিযোদ্ধা বলেন, তিনি (বঙ্গবন্ধু) সবসময় প্রস্তুত থাকতেন। বারবার জেলেও গেছেন। দিনক্ষণ হিসেব করে কারা কর্তৃপক্ষ পরে জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু ৩ হাজার ৫৩ দিন জেলেই কাটিয়েছেন। কারাগারে বসেই তিনি অনেক ইতিহাস লিখে গেছেন। আবার জেল থেকে বাইরে বের হলেই প্রান্ত থেকে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কারাগারের রোজনামচা লিখে গেছেন। সিক্রেট ডকুমেন্টসে তারই প্রমাণ পাচ্ছি। এসবিতে রক্ষিত ছিল সে সিক্রেট ডকুমেন্ট।

ভাষা আন্দোলনের শুরুতেই পাকিস্তানের জাতির পিতা কায়েদে আজমের মুখের উপর ভাষার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু প্রতিবাদ করেছিলেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে কায়েদে আজম যখন ঘোষণা করেন উর্দুই হবে রাষ্ট্রভাষা, তখন তার মুখের উপর বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, নো নো বাংলা হবে রাষ্ট্রভাষা। জোর করে চাপিয়ে দেওয়ার দৃশ্য তিনি মানতে পারেননি। তখন থেকেই তার শুরু জেলে যাওয়া-আসা।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সত্যকে উপলব্ধি করতেন। আমাদের স্বাধীন হতেই হবে৷ পাকিস্তান নামক দেশ হবার পর থেকেই সেটি তিনি লালন করা শুরু করেন। কারণ এক শোষক থেকে আরেক শোষকের হাতে আমরা পড়ে গিয়েছিলাম। পাকিস্তান মানে শোষণের ইতিহাস। তিনি তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশের প্রান্ত থেকে প্রান্তরে ঘুরে বেড়িয়েছেন। নিরস্ত্র বাঙালি সশস্ত্র হয়েছিলাম।

তিনি আরও বলেন, মার্চের ৩ তারিখে আমরা পতাকা উড়িয়ে জানিয়েছিলাম আমরা স্বাধীন দেশ চাই, নিরঙ্কুশ বিজয়ের পরও বঙ্গবন্ধুকে ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছিল না। তাই তিনি ছাত্র নেতাদের বলতেন; তোমরা তৈরি থাকো, যুদ্ধ ছাড়া আমাদের গতি নাই।

মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন। তবে তিনি আলোচনার পথ তিনি বন্ধ রাখেননি। অপেক্ষা করলেন। ২৪ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেছেন, রক্তের উপর পা দিয়ে সিদ্ধান্ত বদলাতে পারবো না। ২৫ মার্চ পর্যন্ত কিছু হচ্ছিল না। আলোচকরা চলে যাচ্ছিল। রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম আমরা, পায়ের স্যান্ডেল খুলে ছুড়ে মেরে প্রতিবাদ করেছিলাম। ওই রাতেই অপারেশন সার্চলাইট শুরু হলো। সবকিছু তছনছ করে দেবার পরিকল্পনা থেকে। আমরা তেজগাঁওয়ে গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করলাম। প্রথম বাধা পেলো জয়বাংলা স্লোগানে।

তিনি বলেন, রাজারবাগ-পিলখানায় ভাগাভাগি করে দল চলে যাই। মৃত্যু অবধারিত জেনেও সম্মুখ যুদ্ধ ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বীর বাঙালি৷ এই দুঃসাহস আমরা পেয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে। যে শক্তিতে আমরা বলিয়ান।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাজারবাগের পুলিশও সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। শুধু রাজারবাগ নয়, সারাদেশেই সহযোগিতা করেছিল। তখন থেকে শুরু লড়াই, মুক্তিযুদ্ধ। সে লড়াইয়ে আমরা ৯ মাসে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলাম।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন