আর্কাইভ থেকে জাতীয়

বৈশ্বিক ফ্যাশন ব্রান্ডগুলো বাড়তি দামে কিনবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক

বাংলাদেশ থেকে এবার বেশি দামে তৈরি পোশাক কিনবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৈরি পোশাক ও জুতাক্রেতাদের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বৈশ্বিক সংস্থা-আমেরিকান অ্যাপারেল অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন-এএএফএ।।বাংলাদেশে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করায় সংগঠনটির সদস্যরা বেশি দামে তৈরি পোশাক কেনার ব্যাপারে রাজি হয়েছে। বিশ্বখ্যাত সুইডিশ ফ্যাশন রিটেইলার ব্র্যান্ড এইচঅ্যান্ডএম ও গ্যাপ এবং অন্যান্য ফ্যাশন প্রতিষ্ঠানসহ এক হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান এই সংস্থাটির সদস্য।

দেশের পোশাক কারখানাগুলোতে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ পরিস্থিতির মধ্যে তৈরি পোশাকের ক্রয়মূল্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য বেশ ইতিবাচক।মূলত পোশাক শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করায় তারা ক্রয়মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কাছে পাঠানো এক ই-মেইল বার্তায় এএএফএ ’র প্রধান নির্বাহী স্টিফেন লামার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়,তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে শীর্ষে রয়েছে চীন। তারপরই বাংলাদেশের অবস্থান। সম্প্রতি তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রমিক-অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় শ্রমিকদের দাবির মুখে পোষাকমালিকদের সঙ্গে বৈঠকে মাসিক মজুরি ৬০ ভাগ বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। এটি পাঁচ বছরের মধ্যে প্রথম। যদিও এসময়ে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপক মুল্যবৃদ্ধি শ্রমিকদের দুর্ভোগ আরো বাড়িয়েছে।

এদিকে, কারখানা মালিকরা বলছেন, মজুরি বাড়ানোর ফলে তাদের উৎপাদন ব্যয় অন্তত ৫ থেকে ৬ শতাংশ বেড়ে যাবে। কারণ, শ্রমঘন এ শিল্পের ১০ থেকে ১৩ শতাংশ ব্যয়ই হয় মজুরিতে। এমতাবস্থায় ক্রয়মূল্য একই পরিমাণে বাড়াবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে স্টিফেন লামার ই-মেইল বার্তায় জানান,অবশ্যই।

এএএফএর প্রধান নির্বাহী আরো বলেন, আমরা এবং আমাদের সদস্যরা বেশ কয়েকবার বলেছি, মজুরি বৃদ্ধিকে সমর্থন জানানোর জন্য আমরা দায়িত্বশীল ক্রয় পদ্ধতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশি শ্রমিকেরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে জন্য প্রতিবছর ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনার আহ্বান আমরা বরাবরই জানিয়ে আসছি।'

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের পোশাক শিল্প গড়ে তোলার পেছনে মূলত সস্তা শ্রমমূল্য সহায়ক ভূমিকা রাখে। এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের। তৈরি পোশাক বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান খাত। জিডিপিতে এ খাতের অবদান প্রায় ১৬ শতাংশ।

রয়টার্সের্ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এই বাস্তবতায় ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর পরেও শ্রমিকরা বলছেন, সেটা খুবই সামান্য। তারা জানান, পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের আঞ্চলিক প্রতিযোগী দেশগুলোতে মজুরি বেশি। বাড়ানোর পর বাংলাদেশের শ্রমিকদের মজুরি দাঁড়াচ্ছে ১১৩ ডলার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার তথ্যমতে, ভিয়েতনামের শ্রমিকদের গড় মাসিক মজুরি ২৭৫ ডলার এবং কম্বোডিয়ায় তা ২৫০ ডলার।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন