আর্কাইভ থেকে ইউরোপ

ব্রাভারমেন বরখাস্ত, যুক্তরাজ্যের নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্লেভারলি

ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারমেনকে বরখাস্ত এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিকে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রিসভায় বড় ধরণের পরিবর্তন এনেছেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সুয়েলার বরখাস্তের কারণ এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়,একটি বিস্তৃত রদবদলের অংশ হিসেবে সোমবার ব্রাভারম্যান বরখাস্ত হয়েছেন।

সুয়েলা ব্রাভারমেন সরে যাওয়ার  পরই যুক্তরাজ্যের পরবর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে ডাউনি স্ট্রিট নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে জেমস ক্লেভারলির নাম ঘোষণা করে।

এর আগে তিনি এতদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আর তার জায়গায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ডেভিড ক্যামেরন।ব্রাভারম্যানের যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছাড়ার ঘটনা অবশ্য এবারই প্রথম নয়। এর আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস তাকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করেছিলেন। কিন্তু সেবার ব্যক্তিগত ইমেইল থেকে ‘অফিসিয়াল ডকুমেন্ট’ পাঠানো কাণ্ডের জেরে হইচই শুরু হলে দায় স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন ব্রাভারম্যান। সেবার তিনি মাত্র ৪৩ দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সামলান।তবে তার পদত্যাগের পর ট্রাস সরকার মাত্র কয়েকদিনই টিকে ছিল।

ঋষি সুনাক প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর আবারও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  হিসেবে ব্রাভারম্যানকে দায়িত্বে ফিরিয়ে আনেন। তার পদত্যাগে ও দায়িত্বে ফিরে আসার মধ্যে ব্যবধান ছিল মাত্র ছয়দিন।

কেন বরখাস্ত হলেন সুয়েলা ব্রাভারমেন:  মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন এর প্রতিবেদনে বলা হয়,গত শনিবার লন্ডনে  ফিলিস্তিনিপন্থি একটি বড় বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রাভারম্যান। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে ন্যাশনাল মার্চ ফর প্যালেস্টাইন নামে বিক্ষোভ শুরু করে ফিলিস্তিনপন্থী সাধারণ জনগণ।

শনিবার দুপুর ১২টায় শুরু হওয়া ওই বিক্ষোভে অনেককে ‘নদী থেকে সমুদ্র, ফিলিস্তিন হবে মুক্ত’ স্লোগান দিতে দেখা যায়। ‘ফিলিস্তিনকে মুক্ত করো’, ‘গণহত্যা বন্ধ করো’, ‘গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করো’— লেখা ব্যনার দেখা যায় বিক্ষোভে।

এই বিক্ষোভ ঠেকাতে ইসরায়েলের পক্ষে পাল্টা বিক্ষোভ শুরু করে যুক্তরাজ্যের কট্টর ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠীর সদস্যরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। ইসরায়েলপন্থী ১২০ জনকে আটক করে লন্ডনের পুলিশ।

ফিলিস্তিনের পক্ষে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভকে ‘বিদ্বেষমূলক মিছিল’ বলে মন্তব্য করেন ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারমেন। এতে লন্ডনে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়। বিরোধী লেবার পার্টির সংসদ সদস্যরা সুয়েলাকে সরিয়ে দিতে দাবি তোলেন। অন্যদিকে, নিজের  কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের কাছ থেকেও ব্রাভারম্যানকে সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে জোরালো চাপ আসে। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগ করতে বললে সুয়েলা ব্রাভারমেন তা মেনে নেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন