আর্কাইভ থেকে ইউরোপ

ক্যামেরনের কামব্যাক, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদেও ফিরবেন?

ডেভড ক্যামেরন। এক সময় ছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। তবে গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় আসার পর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। সেটা ২০১৬ সালের ঘটনা। তারপর থেকে তিনজন  প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন ব্রিটেনের জনগণ। তারা হলেন- বরিস জনসন, লিজ ট্রাস ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তবে দীর্ঘ ৭ বছর পর আবারো ব্রিটিশ সরকারে কামব্যাক করেছেন যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

বিশ্ব-রাজনীতির ইতিহাসে সম্ভবত এত বড় ‘কামব্যাক’ আর দেখা যায়নি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার ৭ বছর পর ফের যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রিসভায় ফিরলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ নভেম্বর) ডেভিড ক্যামেরনকে ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এদিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রাভারমেনকে বরখাস্ত এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলিকে নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়ে মন্ত্রিসভায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। সুয়েলার বরখাস্তের কারণ এখনও সরকারিভাবে জানানো হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়,সুয়েলা ব্রাভারমেন সরে যাওয়ার পরই যুক্তরাজ্যের পরবর্তী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কে হচ্ছেন তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা শুরু হয়। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে ডাউনি স্ট্রিট নতুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে জেমস ক্লেভারলির নাম ঘোষণা করে। এর আগে তিনি এতদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আর তার জায়গায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান ডেভিড ক্যামেরন।

সংসদ সদস্য না হয়েও পররাষ্ট্রমন্ত্রী: ডেভিড ক্যামেরন বর্তমানে ব্রিটিশ সংসদের নির্বাচিত সদস্য নন। তাই মন্ত্রী হিসেবে তাঁকে নিয়োগ করার জন্য তাঁকে হাউস অব লর্ডসের আসন দেওয়া হয়েছে। সোমবার ঋষি সুনকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়, ডেভিড ক্যামেরনকে ব্রিটেনের উচ্চকক্ষ, হাউস অব লর্ডসে একটি আসন দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছেন রাজা চার্লস। এর ফলে তাঁর মন্ত্রী হিসাবে সরকারে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনও বাধা নেই।

এদিকে,সুনাকের মন্ত্রিসভায় ক্যামেরনের প্রবেশের ফলে তিনি প্রধানমন্ত্র্রী হিসেবে ফের ফিরবেন কিনা তানিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।  ব্রিটেনের কোনও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফেরাটা একেবারেই অস্বাভাবিক এবং অপ্রত্যাশিত। এধরণের কোনো ঘটনা ব্রিটেনের ইতিহাসে নেই।

ব্রেক্সিট গণভোটে হেরে ২০১৬ সালে পদত্যাগ করেছিলেন ডেভিড ক্যামেরন। ২০১০ থেকে তিনি ওই পদে ছিলেন। সক্রিয় রাজনীতি থেকে সরে এসে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সাত বছরের স্মৃতিকথা লিখেছেন। বিভিন্ন ব্যবসায় নিজেকে যুক্ত করেছেন। তবে, ২০২০ সাল থেকেই কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রীরা তাঁর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ রেখে চলছিলেন। এ থেকে বিশ্লেষকদের ধারণা, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবারও প্রতিযোগিতা করার ইচ্ছা তাঁর রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন