আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ধর্ষণের পর হত্যা, হত্যার পর ফের ধর্ষণ

নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার শিশু আসমা আক্তারকে (৫) কে ধর্ষণের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার পর আবারও তাকে ধর্ষণ করে ঘাতক। পরে লাশ পলিথিনে মুড়িয়ে বাড়ির পাশে ময়লার ট্যাংকে ফেলে দেয়া হয়। 

গেলো রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুর দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি শাহাদাত হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নবনীতা গূহ আসামির জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালতের নির্দেশে আসামিকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে গেলো শনিবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিহতের চাচাতো ভাই শাহাদাত হোসেন আদালতে দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য দেন। 

গ্রেপ্তারকৃত আসামি শাহাদাত হোসেনের আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাটখিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গিয়াস উদ্দিন। 

তিনি বলেন, শাহদাত জবানদন্দিতে বলেছেন নির্যাতনের শিকার শিশুটি তার চাচাতো বোন। তিনি ঘটনার দিন গেলো ২৪ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে বাড়ির সামনের বরই গাছের নিচে থেকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে যান। সেখানে তখন অন্য কেউ ছিল না।

ওসি গিয়াস উদ্দিন জানান, শাহাদাত স্বীকারোক্তিতে বলেছেন, তিনি শিশুটিকে মুখ ও হাত-পা চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ দেখা দেয়ায় আছমা চিৎকার দেওয়ার চেষ্টা করলে তার নাক-মুখ চেপে ধরে তাকে মেরে ফেলেন এরপর আবার ধর্ষণ করেন। মরদেহ বস্তায় ভরে বস্তাটি নিজের রুমের খাটের নিচে লুকিয়ে রাখেন। পরে সন্ধ্যায় পাশের বাড়ির শৌচাগারের ময়লার ট্যাংকের ঢাকনা খুলে সেখানে লুকিয়ে রাখেন।

পুলিশ জানায়, নিখোঁজের ঘটনার ১০ দিনের মাথায় সন্দেহভাজন হিসেবে শাহাদাত হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আছমাকে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেন। পরে তার দেখানো মতে গেলো শনিবার (২ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাশের বাড়ির একটি শৌচাগারের ময়লার ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারের পর শিশু আছমার মরদেহ শনিবার রাতেই চাটখিল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে গেলো রোববার (৪ এপ্রিল) সকালে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের পর জানাজা শেষে বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে আছমার মরদেহ দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় আসমার বাবা গ্রেপ্তারকৃত শাহাদাতের বিরুদ্ধে অপহরণ, ধর্ষণ, হত্যা ও লাশগুমের অপরাধে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন