পিটার হাস কোথায় গেছেন প্রকাশ করবে না সরকার
ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কোথায় গেছেন, সেটি জানলেও ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারের’ কারণে সরকার তা প্রকাশ করবে না।সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসা বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ তাদের নিজস্ব ব্যাপার।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত সাপ্তাহিক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন এসব তথ্য জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন,‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত আছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্যটা পাবলিকলি জানাবে না। একজন রাষ্ট্রদূত কোথায় গেছেন, কতদিনের জন্য যাচ্ছেন, এটা কিন্তু অফিসিয়ালি জানাতে হয়। এটা কিন্তু পাবলিকলি জানানোর কথা কথা না। সেই হিসেবে আমরাও।’
বিদেশি দূতদের অবস্থান বিষয়ে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ে তিনি বলেন, প্রটোকল অনুযায়ী আমরা যেটা অনুসরণ করি এটা কিন্তু বাংলাদেশে যারা বিদেশি মিশন প্রধান বা রাষ্ট্রদূত আছেন, তারা যখন স্টেশন লিভ করেন তারা আমাদের প্রটোকলকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে যান।
সেহেলি সাবরিন বলেন,একইভাবে আমাদের রাষ্ট্রদূতরা যখন লিভ করেন হেডকোয়ার্টারকে জানাতে হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং ওখানকার সরকারকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে আসতে হয়। এ ছাড়া তার অবর্তমানে যাকে দায়িত্বে দেওয়া হয় তার নামটা প্রকাশ করতে হয়। এটা একটা কূটনৈতিক প্রক্রিয়া।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্রীলঙ্কা এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কলম্বোয় গেছেন।
এদিকে, সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যে মন্ত্রী পর্যায়ের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের আলোচনায় বাংলাদেশের নির্বাচন প্রসঙ্গ উঠে আসা ইস্যুতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘আলোচনায় বৃহত্তর বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার নানান দিক উঠে আসা স্বাভাবিক। আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে কী আসবে না আসবে তা এই দুই দেশের নিজস্ব ব্যাপার।’
প্রসঙ্গত, গত ১০ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তার সাথে ছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন।অন্যদিকে,ভারতের পক্ষে বৈঠকে অংশনেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। বৈঠকে বাংলাদেশের আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইস্যুটিও প্রাধান্য পায়। বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ‘টু প্লাস টু বৈঠকে’ বাংলাদেশ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানান।
বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রা বিশেষ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে সেদেশের মানুষ যেভাবে দেখতে চায়, সেই ‘ভিশন’কে ভারত দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। বাংলাদেশের নির্বাচন সেদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং সেদেশের মানুষই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
বিনয় কোয়াত্রা বলেন,“বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই স্পষ্ট করে তুলে ধরেছি আমরা। তৃতীয় কোনো দেশের নীতিমালা নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার জায়গা নেই। বাংলাদেশের নির্বাচন তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেদেশের মানুষ তাদের নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
বন্ধু এবং সঙ্গী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ভারত সম্মান জানায় উল্লেখ করে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব আরো বলেন,‘আমরা। একটি স্থিতিশীল, শান্তিপূর্ণ ও প্রগতিশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে সেদেশের মানুষ যেভাবে দেখতে চায়, সেই ‘ভিশন’কে ভারত দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।’
বিনয় কোয়াত্রা আরও বলেন,‘বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের যে দৃষ্টিভঙ্গি, আমরা যেভাবে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করি, সেটা খুব স্পষ্ট করে তুলে ধরেছি।