দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা সংশোধনে ‘ধর্ষণ’ যুক্ত করতে হাইকোর্টের রুল
নারী ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধের সংজ্ঞার ধারা সংশোধনসহ পুরুষসহ অন্যান্যদের সঙ্গে সংঘটিত একই ধরনের অপরাধকে দণ্ডবিধিতে ‘ধর্ষণ’ হিসেবে যুক্ত করার প্রশ্নে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
গেলো রোববার (১০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তাপস কান্তি বল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
রুলে নারী ধর্ষণ সংক্রান্ত দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারাটি লিঙ্গ সমতা করে সংশোধন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে আইনজীবী তাপস কান্তি বল বলেন, দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারাকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে, সেখানে ডেফিনিশনটা কেবল ভ্যাজাইনাল পেনিট্রেশনকে রিকগনাইজ করে। কিন্তু শব্দটা যদি কেবল পেনিট্রেশন হয়, সেক্ষেত্রে শরীরের যেকোনো জায়গায়, তা ওরালও হতে পারে, পেনিট্রেট করলেই সেটা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে। আমরা আইনে থাকা ধর্ষণের সংজ্ঞার জেন্ডার নিউট্রালাইজেশন দাবি করেছি।
এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি এ রিট আবেদনটি করা হয়।
তাপস কান্তি বল আরও জানান, ওই সময় ছেলে শিশু তথা পুরুষকে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছিল। এ ধরনের নির্যাতনকে ধর্ষণের অপরাধ হিসেবে বিচার করা যাচ্ছে না। এ কারণে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় সংশোধন এনে ‘নারী ধর্ষণ’ এর অপরাধের পাশাপাশি অপরাধ হিসেবে ‘পুরুষ ধর্ষণ’ বিষয়টিকে যুক্ত করার আবেদন করা হয়।
আবেদনে উল্লেখ করা হয়, দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় শুধু পুরুষ দ্বারা নারীদের ধর্ষণের বিষয়ে বলা আছে। এখানে সম্মতি ছাড়া নারীদের দ্বারা নারী, নারীর দ্বারা পুরুষ, পুরুষ দ্বারা পুরুষ ও একজন ট্রান্সজেন্ডার আরেক ট্রান্সজেন্ডারের দ্বারা যৌন নিপীড়নের বিষয়টি নেই।
কোনো নারীকে পুরুষ ধর্ষণ করার বিষয়ে দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় পাঁচটি উপাদানের কথা বলা হয়েছে। সেগুলো হলো- নারীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে, সম্মতি ছাড়া, সম্মতি থাকলেও তাকে মৃত্যু ও আঘাতের ভয় দেখিয়ে, স্বামী না হয়েও স্বামী বলে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে এবং সম্মতি থাকলেও ১৪ বছরের কম বয়সের নারীর সঙ্গে যৌন সহবাস করলে তা ধর্ষণ হিসেবে বিবেচিত হবে।
তাসনিয়া রহমান