আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মহাকাব্যিক ম্যাচে শেষ চারে রিয়াল মাদ্রিদ

হাইভোল্টেজ ম্যাচে রিয়ালকে হারিয়েও বিদায় চেলসির। সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে শুরু থেকেই উজ্জীবিত হয়ে চেলসি বের্নাবেউয়ের সবুজ গালিচায় নিজেদের মেলে ধরল সর্বোচ্চ সেরা রূপে। প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে জালে বল পাঠাল তিনবার।

উত্থান-পতন, শঙ্কার দোলাচল, শিহরণ-রোমাঞ্চ। কমতি রইল না কোনো কিছুর। পরতে পরতে ছড়ালো উত্তেজনা। প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে একে একে জালে বল পাঠাল তিনবার। খাদের কিনারা থেকে কোনোমতে ঘুরে দাঁড়াল রিয়াল মাদ্রিদ। অতিরিক্ত সময়ে ভিনিসিউস-বেনজেমা জুটিতে ভর করে উঠে গেল চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে।

স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ থেকে চেলসির বিপক্ষে ৩-১ গোলের ব্যবধানে জয় পেয়ে বেশ স্বস্তিতেই ছিলো মাদ্রিদ। তবে ফিরতি লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে চেলসির সামনে যেন দাঁড়াতেই পারেনি অল হোয়াইটসরা। রোমাঞ্চ ছড়িয়েছে ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিট। সেখানে চেলসি ৩-১ গোলের ব্যবধানে জিতলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। 

আর অতিরিক্ত সময়ে করিম বেনজেমার দুর্দান্ত গোলে ব্যবধান ৩-২ করে রিয়াল। আর দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৪ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্বাগতিক রিয়াল। এরপর বাকি সময়টা কোনো গোল হজম না করে কাটিয়ে দিলে চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালের টিকিট কাটে মাদ্রিদ। 

ম্যাচের স্কোরলাইন ৩-০, দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ গোলে এগিয়ে চেলসি।  সেমিফাইনাল তখন তাদের দৃষ্টিসীমানায়।  অবিশ্বাস্য ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লেখার সম্ভাবনা ধাক্কা খেলেও চেলসির আক্রমণ থামেনি। নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা চার মিনিটে দুটি সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। প্রথমবার গোলমুখে ফাঁকায় বল পেয়ে উড়িয়ে মারার পর দ্বিতীয়বারও ক্রসবারের ওপর দিয়ে বল পাঠান যুক্তরাষ্ট্রের মিডফিল্ডার।

অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরু হতেই যেন সবকিছু নতুন রূপে ধরা দেয়। মৌসুমে রিয়ালের সাফল্যের সবচেয়ে বড় কারিগর বেনজেমা-ভিনিসিউস জ্বলে ওঠেন। জ্বলে ওঠে রিয়াল। বাঁ দিকের বাইলাইন থেকে ব্রাজিলিয়ান সতীর্থের ক্রস ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন ফরাসি স্ট্রাইকার।

আসরে বেনজেমার গোল হলো ১২টি। তার চেয়ে একটি গোল বেশি করে তালিকার শীর্ষে বায়ার্ন মিউনিখের রবার্তো লেভানডোস্কি। প্রথম ৯০ মিনিটে চেলসির রক্ষণ ছিলো একটা দুর্গের মতো। সেই তারাই কিনা এখানে খেই হারিয়ে বসল। 

তবে, এদিনের চেলসি তো শেষের আগে শেষ হওয়ার নয়। শেষ ১০ মিনিটে আবারো পুরনো রূপে ফেরে তারা। করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ। প্রথমার্ধের মতো পুরো ১২০ মিনিটের লড়াইয়ের পরিসংখ্যানেও চেলসির দাপট স্পষ্ট। বল দখলে আধিপত্য ধরে রেখে তারা গোলের উদ্দেশ্যে শট নেয় ২৮টি, যার মধ্যে সাতটি থাকে লক্ষ্যে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একরাশ হতাশাই সঙ্গী তাদের।

গতবার চেলসির কাছে হেরেই রিয়ালকে বিদায় নিতে হয়েছিলো সেমিফাইনাল থেকে। এবার তাদের হারিয়েই পা রাখল শেষ চারে। তাই ঘরের মাঠে ম্যাচ জুড়ে কেবল ১০ শটের চারটি লক্ষ্যে রাখার মলিনতা, হারের হতাশা থাকলেও দুই লেগের লড়াইয়ে পাওয়া জয়ে রিয়ালের প্রতিশোধের জ্বালা হয়তো অনেকটাই মিটল।

শেষ চারে ম্যানচেস্টার সিটি অথবা আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে খেলবে রেকর্ড ১৩ বারের চ্যাম্পিয়নরা।

হাসিব মোহাম্মদ

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন