আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

২১ বছর আত্মগোপনে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি, বদলেছেন নাম-পেশা

জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি শফিকুল রহমান ওরফে শফিকুল ইসলাম ওরফে আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

২০০১ সালে রমনা বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা, ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াসহ ৫ জন নিহতের ঘটনায় জড়িত শফিকুল ইসলাম। ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রমনা বটমূলে হামলার পর তিনি আত্মগোপনে থেকে সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন। আব্দুল করিম নাম ধারণ করে ২০০৮ হতে নরসিংদীতে একটি মাদরাসায় আত্মগোপন করেন।

আজ শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) রাজধানীর কাওরান বাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, মুফতি শফিকুল ২০০১ সালে রমনা বটমূলে বোমা হামলা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি। তাকে বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকায় অভিযান চালিয়ে  গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ইমাম পরিচয়ে ২১ বছর ধরে পলাতক ছিলেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, শফিকুর রহমান নরসিংদী থাকাকালীন পরিচয় গোপন করে আব্দুল করিম নামে পরিচয় দিতেন। আব্দুল করিম নাম ব্যবহার করে তিনি ওই এলাকার চরে অবস্থিত একটি মসজিদে মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে ইমামতির চাকরি নেন। ইমামতির আড়ালে তিনি মানুষকে ধর্মের নামে বিভ্রান্তিমূলক অপব্যাখ্যা দিতেন। অত্যন্ত কৌশলে মাঝে মাঝে ভিন্ন স্থানে তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতেন।

তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর সব মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করছে র‌্যাব। ইতোপূর্বে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অন্যতম পলাতক আসামি জঙ্গি ইকবালকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ১৪ এপ্রিল (সোমবার) রাতে র‌্যাব-২ কিশোরগঞ্জের ভৈরব এলাকা থেকে মুফতি শফিকুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে।

র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, মুফতি শফিকুল ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত ঢাকায় পড়াশোনা করেন। হেদায়া পাস করার পর ১৯৮৩ সালে ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় ভর্তি হন। ১৯৮৭ সালে পাকিস্তানের করাচিতে ইউসুফ বিন নূরী মাদরাসায় ফতোয়া বিভাগে ভর্তি হয়ে ৩ বছরের ইফতা (ফতোয়া) কোর্স সম্পন্ন করেন। ওই সময় করাচির নিউ টাউনে মুফতি হান্নানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ওই প্রতিষ্ঠানে মুফতি হান্নানও পড়াশোনা করতে যান।

তিনি বলেন, শফিকুল ১৯৮৯ সালে পাকিস্তানে অবস্থানকালীন আফগানিস্তানে চলে যান এবং তালেবানদের পক্ষে যুদ্ধ করেন। ওই বছরের শেষের দিকে তিনি আফগানিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসে আসেন।

আফগানিস্তান থেকে দেশে এসে ‘হরকাতুল জিহাদ, বাংলাদেশ’ নামে একটি জঙ্গি সংগঠন গড়ে তুলেন। 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন