আর্কাইভ থেকে জাতীয়

জাতীয় অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিক আর নেই

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস করেন। গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) শাহাজাদী সুলতানা ডলি।

চিকিৎসা খাতে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিক ২০০৪ সালে স্বাধীনতা পদক পুরস্কারে ভূষিত হন। তিনি ২০০৬ সালে জাতীয় অধ্যাপক হিসবে নির্বাচিত হন।

আব্দুল মালিক জন্ম ১৯২৯ সালের ১ ডিসেম্বর সিলেটর দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই ইউনিয়নের পশ্চিমভাগ গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মরহুম ফুরকান আলী, মাতা মরহুমা সৈয়দা নুরুন্নেছা খাতুন।

প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে ১৯৩৯ সালে সিলেট সরকারি হাইস্কুলে ভর্তি হন। ১৯৪৭ সালে মেট্রিক (এসএসসি) পরীক্ষায় অংশ নিয়ে স্টার মার্কসহ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং সরকারি বৃত্তি পান। তখন এ ধরনের ফলাফল বেশ গৌরবের বিষয় ছিল।

এরপর সিলেট সরকারি এমসি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪৯ সালে আইএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। তখন পূর্ব পাকিস্তানে কেবল একটাই বোর্ড ছিল, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এই পরীক্ষায় তিনি ১১তম স্থান অর্জন করেন।

আইএসসি পাসের পর ১৯৪৯ সালে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। ১৯৫৪ সালে নভেম্বর মাসে মেডিকেল কলেজের চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।

১৯৫৮ সালে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পেশোয়ারে কর্নেল আজমিরের কাছে মেডিকেল স্পেশালিস্টের যোগ্যতা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এতে প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হন।

১৯৬৩ সালে সরকার তাকে বিলেতে পাঠায় উচ্চশিক্ষার জন্য। ১৯৬৪ সালে তিনি এমআরসিপি পাস করেন এবং হ্যামার স্মিথ হসপিটাল অ্যান্ড পোস্টগ্রাজুয়েট মেডিকেল স্কুল, লন্ডন থেকে কার্ডিওলজিতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

আব্দুল মালিক ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান আর্মি মেডিকেল কোরে যোগদান করেন। রাউয়ালপিন্ডির মিলিটারি হাসপাতালে কার্ডিয়াক সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। ১৯৭০ সালের জুন মাসে বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তৎকালীন আইপিজিএমআর) যোগদান করেন এবং ১৯৭০-১৯৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি আইপিজিএমআরে কার্ডিলজির অধ্যাপক হিসাবে কাজ করেন এবং কার্ডিয়াক ইউনিট প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বিশেষজ্ঞ প্যানেল কমিটির সদস্য হিসেবে ১৯৮০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত ছিলেন।

সর্বজনশ্রদ্ধেয় এ চিকিৎসক ২০০১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এ ছাড়াও তিনি ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল, বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির উপদেষ্টা কাউন্সিলের সভাপতি, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কাউন্সিল চেয়ারম্যানসহ জাতীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন