আর্কাইভ থেকে জাতীয়

‘জামায়াত-মৌলবাদী চক্র প্রতিহত করে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখুন’

‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ’৭১-এর ঘাতক, মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-মৌলবাদী চক্র এবং দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যেকোনও চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই আহবান জানান।

১৯৭১ সালের এই  দিনে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানিরা নিজেদের পরাজয় বুঝতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করতে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করেছে। এদেশীয় দালালদের সহযোগিতায় পাকিস্তানি সেনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, সাংস্কৃতিক কর্মীসহ বিভিন্ন পেশার প্রথিতযশা ব্যক্তিদের অপহরণ করে রাজধানীর রায়েরবাজার ও মিরপুরের বধ্যভূমিতে নিয়ে তাদের নির্মমভাবে হত্যা করে।দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি-সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি কালো অধ্যায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে আমি দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ’৭১-এর ঘাতক, মানবতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী জামায়াত-মৌলবাদী চক্র এবং দেশ ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির যেকোনও চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করে দেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রা এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাচ্ছি।’

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কময় দিন-মন্তব্য করে সরকারপ্রধান তাঁর বাণীতে আরও বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ও তাদের দোসররা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।’

বাণীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কর্মসূচি:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এদিন সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রীর নেতৃত্বে শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যরা এবং যুদ্ধাহত ও উপস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধারা একই দিন সকাল ৭টা ২২ মিনিটে মিরপুর বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে এবং সকাল সাড়ে ৮টায় রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।। এছাড়া সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সর্বস্তরের জনগণ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে। এছাড়া, সব মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা করা হবে।

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো হবে। আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,বিকাল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখবেন দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী ও জাতীয় পর্যায়ের নেতারা।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন