আজ মহান বিজয় দিবস
আজ ১৬ ডিসেম্বর। মহান বিজয় দিবস। ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে নয় মাস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে চুড়ান্ত ভাবে বাঙালি জাতির ভাগ্যে লাল সবুজের সূর্যটি উদয় হয়েছিলো আজকের দিনে। ৭১-এর ১৬ ডিসেম্বরে বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম হয় স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ।
১৯৭১ মানে বাংলাদেশের অস্তিত্ব। বিজয় মানে অর্জন, বিজয় মানে লাখো শহীদের রক্ত, বিজয় মানে বীরাঙ্গনার কান্না, বিজয় মানে জাতির পিতার বজ্রকন্ঠের ভাষণ।
দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম গৌরব ও আনন্দের দিন। লাখো শহীদের রক্ত নদী পেরিয়ে আসা শোক আর অশ্রু এবং মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর সশ্রদ্ধ বেদনারও দিন।
১৯৪৮ সাল থেকে ৫২ র ভাষা, ৬৬র ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯র গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭১ এর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং ২৫ মার্চ। বাংলার শোষিত বঞ্চিত মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে বুটের তলায় স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য সেই কালরাতে বর্বর হত্যাকাণ্ড চালায় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী। নির্বিচারে নিরস্ত্র মানুষ হত্যার মাধ্যমে বিশ্বের ইতিহাসে সৃস্টি করে এক কলঙ্কজনক কালরাত।
আলোচনার টেবিলে শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ ছেড়ে পাক হানাদাররা বন্দুকের নল আর কামানের গোলা বেছে নেয় সমাধানের উপায় হিসেবে। যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় পুরো জাতির ওপর। এরপরই চূড়ান্ত হয় বাঙালি জাতির চুড়ান্ত সংগ্রামের পথচলার যাত্রা।
বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার পর শুরু হয় চূড়ান্ত লড়াই। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদ ও দু’লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা।
১৯৭১ সালের আজকের দিনে তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ) পাকিস্তানী বাহিনী প্রধান লে. জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণ করেন।
এদিন ৯১ হাজার ৪৯৮ জন নিয়মিত-অনিয়মিত এবং আধা সামরিক সৈন্য নিয়ে সম্মিলিত বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার কাছে আত্নসমর্পন করেন নিয়াজী। পৃথিবীর মানচিত্রে সার্বভৌম নতুন জাতি-রাষ্ট্র হিসেবে অভ্যুদয় ঘটে বাংলাদেশের।
১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে বিজয় দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়।