আর্কাইভ থেকে এশিয়া

ভাইকে কিডনি দেওয়ায় স্ত্রীকে তিন তালাক!

নিজের ভাই। দুটি কিডনিই বিকল হয়ে গিয়েছিল তার। ভাইকে বাঁচাতে তাই একটি কিডনি দান করেছিলেন তারান্নুম নামে এক বিবাহীত নারী। আর এই কিডনি দান করাটাই কাল হয়েছে তার। স্বামী মোহাম্মদ রশিদ তিন তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন।ভারতের উত্তর প্রদেশের গোন্ডা জেলায় ঘটেছে এই হৃদয়বিদারক ঘটনা।

ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, উত্তর প্রদেশের গোন্ডা জেলার বাসিন্দা তারান্নুমকে তিন তালাক দিয়েছেন তাঁর স্বামী মহম্মদ রশিদ। ৪০ বছর বয়সী তারান্নুমের অভিযোগ,তার ভাইকে কিডনি দেওয়ার জন্যই রশিদ তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে তিন তালাক দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ভাইকে কিডনি দান করার জন্য রশিদ তাঁর থেকে ৪০ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন।দিতে পারেননি বলে তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপে তিন তালাক লিখে পাঠান। স্বামীর এভাবে তিন তালাক দেওয়ার ঘটনা মেনে নিতে নারাজ দীর্ঘদিন ধরে অপমান সহ্য করা তারান্নুম। তাই পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার  প্রতিবেদনে বলা হয়,২০ বছর আগে তারান্নুমের সঙ্গে রশিদের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর কর্মসূত্রে রশিদ সৌদি আরব চলে যান। তাঁদের কোনও সন্তান না হওয়ায়  রশিদ দ্বিতীয় বিয়েও করেন। সম্প্রতি তারান্নুমের ভাই মোহাম্মদ শাকিরের দুটি কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য মাস পাঁচেক আগে মুম্বাই যেয়ে  অস্ত্রোপচার করে তাঁর একটি কিডনি ভাইকে দান করেন। কিডনি দানের পর দীর্ঘদিন চিকিৎসা, বিশ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর সম্প্রতি তিনি গোন্ডায় শ্বশুরবাড়ি ফিরে আসলে  স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হোয়াটসঅ্যাপে তারান্নুমকে তিন তালাক লিখে দেন রশিদ।

তিন তালাক দেওয়ার ঘটনায়  বুধবার (২০ ডিসেম্বর)স্থানীয় থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে এফআইআর  (এজাহার) দাখিল করেছেন তারান্নুম।

প্রসঙ্গত, প্রথা অনুযায়ি তিনবার তালাক উচ্চারণ করে, বার্তা পাঠিয়ে ই-মেইল পাঠিয়ে মুসলিম স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারতেন। তবে চারবছর আগে  মুসলমানদের  এই ‘তিন তালাক প্রথা’কে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয় এই আই্ন ভঙ্গ করলে তিন বছর কারাদণ্ডেরও বিধান রাখে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন