আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

হাসপাতাল থেকে বাড়িতে মমতা, সোমবার থেকে আবারো প্রচারে

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। বিশেষ জুতা পরে হাসপাতাল থেকে বের হন মমতা। এদিকে, চিকিৎসকদের পরামর্শ পুরোপুরি না মেনেই সোমবার থেকে নির্বাচনী প্রচারে নামছেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে সফর শুরু হবে ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে। হুইলচেয়ারে চলাফেরা করবেন তৃণমূল নেত্রী।

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, সফরে বেরোনোর আগে রোববার নন্দীগ্রাম দিবসে বাড়ি থেকে তৃণমূলের নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করবেন মমতা। বৃহস্পতিবার ইস্তাহার প্রকাশের কথা ছিল। তার আকস্মিক দুর্ঘটনায় কর্মসূচি পরিবর্তন করা হয়।

শুক্রবার সন্ধ্যায় এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার নন্দীগ্রামে বিধানসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর কেন্দ্র সফরের সময় গাড়ির দরজা থেকে বাঁ পায়ে গুরুতর আঘাত পান তিনি। আঘাত লাগে শরীরের কয়েকটি স্থানে। দ্রুত তাকে এসএসকেএম হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আঘাত লাগা পায়ে প্রাথমিক প্লাস্টার করে চিকিৎসকরা। প্লাস্টার খুলে শুক্রবার আবারো পরীক্ষার পর আর একটি প্লাস্টার করা হয়। প্লাস্টার থাকা অবস্থায় বিশেষ ধরনের জুতা প্লাস্টার শ্যু পরে হাঁটাচলা করবেন মমতা।

চিকিৎসকরা চেয়েছিলেন, আরও ৪৮ ঘণ্টা হাসপাতালে পর্যবেক্ষণে থাকুন মুখ্যমন্ত্রী। অন্তত সাত দিন বিশ্রামের দেয় তারা। অনেকটা জোর করেই বাড়ি ফিরে যান মমতা। তবে সাতদিন পর আবার তাকে চেকআপের জন্য হাসপাতালে যেতে হবে।

বাড়ি ফিরে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আঘাত, যন্ত্রণা সব কিছুর পরও বলছি, মানুষের কাছে গিয়ে আমাকে দাঁড়াতেই হবে। নির্বাচন একটি বড় রাজনৈতিক সংগ্রাম। সেখানে মানুষই আমার শক্তি। তাই নিজের কষ্ট থেকে মানুষের সামনে যাওয়া আমার কাছে বেশি জরুরি।

তবে, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আপাতত মমতার ঘোরাফেরা সবই হুইল চেয়ারে। এজন্য দুটি হুইল চেয়ারের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। একটি তাঁর গাড়ির সিট খুলে বসানো হবে। ওই হুইলচেয়ারেই ঢালু পথ বেয়ে উঠবেন হেলিকপ্টার বা উড়োজাহাজে। একই ভাবে মঞ্চে ওঠার জন্য থাকবে ঢালু পথ। হুইলচেয়ারে বসেই বক্তৃতা করবেন মমতা। নির্বাচনী সফরে বিভিন্ন জেলায় যেসব হোটেল বা গেস্ট হাউসে তিনি থাকবেন সেখানেও প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত রাখা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে থাকার ঘরটি অপ্রশস্ত। সেই ঘরে একটি হুইলচেয়ার তার শয্যার সমান উচ্চতায় রাখা হয়েছে যাতে খাটে ওঠা একটু সহজ হয়।

আঘাতের কারণে মমতাকে শুক্র ও শনিবারের নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছে। তা নিয়েও পীড়িত তিনি। কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী সোমবার ঝাড়গ্রামের লালগড় ও গোপীবল্লভপুরে তার সভা করার কথা। পর দিন মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, কেশিয়াড়ি ও খড়গপুর গ্রামীণ বিধানসভা কেন্দ্রে তিনটি সভা করবেন তিনি।

মমতা সাধারণত মঞ্চে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করেন না। বরং হাতে মাইক নিয়ে মঞ্চের এ মাথা ও মাথা করাই স্বাভাবিক পদ্ধতি। এখন হুইলচেয়ারে বসে বক্তৃতা দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। মমতা বলেন, নিজের সুবিধা-অসুবিধা ভাবার সময় এখন নয়। আমি বিশ্বাস করি, যাদের সামনে যাব সেই জনতার সহযোগিতা পাব। এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।

 

এসএন

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন