আর্কাইভ থেকে ঢালিউড

‘তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো’ গানের স্রষ্টা কে. জি. মোস্তফা আর নেই

‘তোমারে লেগেছে এতো যে ভালো চাঁদ বুঝি তা জানে’ এবং ‘আয়নাতে ঐ মুখ দেখবে যখন’- এর মতো কালজয়ী গানের স্রষ্ঠা, জাতীয় প্রেসক্লাবের প্রবীণ সদস্য ও বিশিষ্ট কবি কে. জি. মোস্তফা আর নেই। 

গেলা রোববার (৮ মে) রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।

মরহুমের পালিত মেয়ের জামাতা মকবুল হোসাইন গণমাধ্যমকে জানান, রোববার (৮ মে) রাত ৮টার দিকে নিজ বাসায় অসুস্থবোধ করেন প্রখ্যাত এ গীতিকার। পরে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মুত্যুকালে তিনি ২ ছেলে রেখে গেছেন। তার এক ছেলে বর্তমানে কানাডায় বসবাস করেন। 

প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, আজ সোমবার (৯ মে)  কে জি মোস্তফার মরদেহ জাতীয় প্রেস ক্লাবে রাখা হবে। সেখানে তার জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।

প্রখ্যাত গীতিকার হিসেবে পরিচিতি থাকলেও কে জি মোস্তফা ছিলেন একজন সফল সাংবাদিক এবং কলামিস্ট । ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। দৈনিক ইত্তেহাদে ১৯৫৮ সালে শিক্ষানবিশ হিসেবে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। ওই বছরেই ‘দৈনিক মজলুম’-এ সহ-সম্পাদক পদে নিয়োগ পান এবং পত্রিকাটির বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত বহাল ছিলেন। এরপর দীর্ঘ বিরতি শেষে ১৯৬৮ সালে সাপ্তাহিক জনতায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন।

স্বাধীনতার পর কে জি মোস্তফা প্রথমে ‘দৈনিক গণকন্ঠ’, পরে ‘দৈনিক স্বদেশে’ চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ‘দৈনিক জনপদে’ কূটনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেন। ঐ সময় ‘নূপুর’ নামে একটি বিনোদন মাসিকও সম্পাদনা করতেন। ১৯৭৬ সালে বিলুপ্ত সংবাদপত্রের একজন সাংবাদিক হিসেবে কে জি মুস্তফা বি.সি.এস (তথ্য) ক্যাডারভুক্ত হন এবং চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরে সহকারী সম্পাদক পদে যোগ দেন। পদোন্নতি পেয়ে প্রথমে সম্পাদক, পরে সিনিয়র সম্পাদক পদে উন্নীত হন।

১৯৬০ সাল থেকে চলচ্চিত্র, রেডিও এবং টেলিভিশনে তার লেখা প্রচুর গান প্রচারিত হয়। হাজার গানের গীতিকার কে জি মোস্তফার ফিল্মি গানগুলো খুবই জনপ্রিয়। তার গানে উপমহাদেশের প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী তালাত মাহমুদ এবং বাংলাদেশের খ্যাতিমান প্রায় সকল শিল্পী কণ্ঠ দেন। এক সময় তিনি নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালনার দিকেও ঝুঁকেছিলেন। ‘মায়ার সংসার’, ‘অধিকার’ ও ‘গলি থেকে রাজপথ’ ছবিতে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজও করেন।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন