তথ্য-প্রযুক্তি

সাংবাদিকতায় হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে চ্যাটজিপিটি

এবার যুগান্তকারী আইনি লড়াইয়ে নেমেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চ্যাটজিপিটির মূল প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই ও মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে তাদের এ লড়াই। কয়েক শ কোটি ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলায় স্বত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় মূল বিতর্কের বিষয় হলো- সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদকে চ্যাটবটের মাধ্যমে অবাধে প্রচার।

মামলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- চ্যাটজিপিটিকে সাংবাদিকতার জন্য হুমকি হিসেবে উপস্থান করেছে নিউইয়র্ক টাইমস। কিন্তু কেন? লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল বা এলএলএমের ব্যবহারের এর উত্তর মিলবে। এআই বটকে প্রশিক্ষিত করতে এই এলএলএম ব্যবহার করা হচ্ছে।

এটা নিয়েই আপত্তি তুলেছে মার্কিন এ সংবাদ মাধ্যমটি। অভিযোগে বলা হয়, এলএলএমের জন্য চ্যাটজিপিটি নিউইয়র্ক টাইমসের লাখ লাখ খবর ও নিবন্ধ বিনা অনুমতিতে ও বিনামূল্যে ব্যবহার করেছে। এসবের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে ফি নেয়া হয়। এর ফলে নিউইয়র্ক টাইমসের কয়েক শ কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। মাইক্রোসফটও এ বিষয়টির দায় এড়াতে পারে না।

গেলো ২৭ ডিসেম্বর সংবাদমাধ্যমটি ম্যানহাটানের ফেডারেল আদালতে প্রতিষ্ঠান দুটির বিরুদ্ধে কয়েক শ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা দায়ের করে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিউজের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

চ্যাটজিপিটিকে ‘প্রশিক্ষিত’ করতে অনুমতি ছাড়া কোটি কোটি খবর ও নিবন্ধ ব্যবহার করায় এর মালিক প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই ও মাইক্রোসফটের বিরুদ্ধে ম্যানহাটানের ফেডারেল আদালতে মামলা হয়।

সাধারণত, চ্যাটজিপিটিসহ অন্যান্য লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ভিত্তিক প্রোগ্রামগুলো অনলাইনে বিদ্যমান বিভিন্ন ডেটা থেকে তথ্য নিয়ে নিজেদের ভান্ডার সমৃদ্ধ করে থাকে। যাই হোক, বিষয়টি নিয়ে মাইক্রোসফট ও ওপেনএআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এ বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেনি।

মামলায় বলা হয়েছে, চ্যাটজিপিটি নিউইয়র্ক টাইমসের প্রকাশিত লাখো নিবন্ধ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করে স্মার্ট হয়ে উঠেছে। নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, তাদের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এখন চ্যাটজিপিটি বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের উৎস হিসেবে তাদের মতো পুরোনো একটি সংবাদপত্রের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, চলমান ইস্যুগুলোর ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে চ্যাটজিপিটি নিউইয়র্ক টাইমসের সংবাদের এমন সব উদ্ধৃতাংশ হাজির করে যা বিনা পয়সায় পড়া সম্ভব নয়। কিন্তু চ্যাটজিপিটির কারণে সেটি পড়া হয়ে যাচ্ছে বিনা পয়সায়। এর অর্থ হলো—নিউইয়র্ক টাইমস সাবস্ক্রিপশন থেকে তার আয় হারাচ্ছে পাশাপাশি বিজ্ঞাপন থেকেও আয় হারাচ্ছে। কারণ পাঠক এখন আর ক্লিক করে সংবাদের ভেতরে প্রবেশ না করায় বিজ্ঞাপনও দেখছেন না।

অবশ্য মামলা করার আগে, গত এপ্রিল থেকে ঘরোয়াভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে ওপেনএআইয়ের সঙ্গে আলোচনা চালিয়েছিল নিউইয়র্ক টাইমস। কিন্তু কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারায় বিষয়টি শেষ পর্যন্ত আদালতে গড়াল।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন