আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

পুঠিয়ায় ৫ ব্যবসায়ীর গোডাউনে মিললো ৯৩ হাজার লিটার ভোজ্যতেল

রাজশাহীর বাগমারার তাহেরপুরের পর এবার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে ৫জন তেল ডিলারের চারটি গোডাউন ও এক ব্যবসায়ী ট্রাক থেকে অবৈধভাবে মজুদ রাখা প্রায় ৯২হাজার ৬শ’ ১৬ লিটার সয়াবিন ও পামওয়েল তেল জব্দ করেছে প্রশাসন। রমজান মাস থেকে এসব ব্যবসায়ীরা তেল কিনে বেশি দাম পাওয়ার আসায় বাজারে বিক্রি না করে মজুদ করে রেখেছিলেন।

মঙ্গলবার (১০ মে) বিকেলে রাজশাহী জেলা ও পুঠিয়া থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে এসব তেল জব্দ করে।

পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান,  গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা ও পুঠিয়া থানা পুলিশের একটি দল বানেশ^র বাজারে অভিযান শুরু করে। একে একে চার ব্যবসায়ীর ৪টি গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে পাওয়া যায় এই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল। আর এক ব্যবসায়ীর ট্রাক থেকে পাওয়া যায় বিপুল পরিমান ভোজ্য তেল। সন্ধ্যার দিকে জব্দ করা তেল পরিমাপ করা হয়। এতে দেখা যায় শুধু মাত্র এই ৫ ব্যবসায়ীই মজুদ করেছেন ৯২ হাজার ৬১৬ লিটার তেল। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।

এদিকে, এই ৫ ডিলারের মধ্যে সরকার এন্ড সান্স-এর মালিক বিকাস সাহার গোডাউন থেকে ৪৮ ড্রাম সয়াবিন ও ২৬ ড্রাম পামওয়েল, এনতাাজ স্টোরের মালিক এনতাজ হাজির গোডাউন থেকে ২২ ড্রাম সয়াবিন ও ১২০ ড্রাম পামওয়েল, মেসার্স পাল এন্ড ব্রাদার্সের মালিক শৈলেন পালের গোডাউন থেকে ৩ ড্রাম সয়াবিন ও ১০০ড্রাম পামওয়েল, রিমা স্টোরের মালিক রাজিব সাহার গোডাউন থেকে ৪৮ড্রাম সয়াবিন ও ২৭ ড্রাম পামওয়েল এবং ব্যবসায়ী ফজলুর রহমানের ট্রাক থেকে ৬০ ড্রাম পামওয়েল তেল জব্দ করা হয়। প্রতিটি ড্রামে ২০৪ লিটার করে তেল রয়েছে।

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ৫ ব্যবসায়ীর পুঠিয়ার বানেশ^র বাজারে বড় দোকান রয়েছে। সেখানে তেলসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রি করা হয়। কিন্তু এই ব্যবসায়ীদের দোকানে তল্লাশী চালিয়ে কোনো ধরনের ভোজ্য তেল পাওয়া যায়নি। বিষয়টি সন্দেহ হয় প্রশাসনের। পরে তাদের গোডাউনে অভিযান চালানো হয়। এক এক করে চারটি গোডাউনে অভিযান চালিয়ে পাওয়া যায় এই বিপুল পরিমাণ সয়াবিন তেল। তেলগুলো মূলত রমজানের আগে থেকেই তারা সংগ্রহ করে রেখেছিল। সয়াবিন তেলের দাম বাড়বে এমন আশঙ্কায় তারা তেল কিনলেও তা বিক্রি করেনি। বিশেষ করে এসব ব্যবসায়ীরা বোতলজাত তেল কিনে সেগুলো ড্রামে ভরে রেখেছেন। সরকার তেলের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার পর তারা মজুদকৃত তেল বিক্রি করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এরই মধ্যে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা ও থানা পুলিশ অেভিযান শুরু করে। পুঠিয়ার বানেশ^রে আরো বেশ কিছু ব্যবসায়ী তেল মজুদ রেখেছে এমন তথ্য থানা ও জেলা পুলিশের কাছে আছে বলেও জানানো হয়েছে।

জেলা পুলিশের সিনিয়র পুলিশ সুপার ইফতেখায়ের আলম জানান, তাহেরপুরের পর দ্বিতীয় দফায় পুঠিয়ার বানেশ^রে অভিযান চালানো হয়েছে। তাহেরপুরে ২০হাজার লিটার তেল পাওয়া গেলেও বানেশ^রে চারটি গোডাউন ও একটি ট্রাক থেকে প্রায় ৯৩ হাজার লিটার তেল পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, জেলা পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।

গত মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুরে পর্যন্ত অবৈধভাবে সয়াবিন তেল মজুদ ও নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত দামে তেল বিক্রি করার অভিযোগে রাজশাহীর তিন ব্যবসায়ীকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক অপূর্ব অধিকারী ও সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ নগরীতে এই অভিযান চালান।

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন