জাতীয়

এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না : সিইসি

এবারের নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে না। কাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক অংশগ্রহণ না হলেও এবারের নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ও অংশগ্রহণমূলক নয় বলা যাবে না। বললেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।

আজ শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

সিইসি জানান, এবারের নির্বাচনে ২৮টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ২৯৯টি আসনে এক হাজার ৯৭১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ইসি। তিনি বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর নির্বাচনের জন্য কাঙ্ক্ষিত অনুকূল রাজনৈতিক পরিবেশ প্রয়োজন। কিন্তু অনস্বীকার্য যে, নির্বাচন প্রশ্নে, রাজনৈতিক নেতৃত্বে মতভেদ রয়েছে। মতভেদ থেকে সংঘাত ও সহিংসতা কাম্য নয়। কিন্তু পরিতাপের বিষয় নাশকতা ও সহিংসতা একেবারেই হচ্ছে না তা বলা যাচ্ছে না। রাষ্ট্রীয় ধন-সম্পদের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে। নির্দোষ, নিরীহ, নিষ্পাপ শিশু, নারী, পুরুষের মর্মান্তিক ও মর্মন্তুদ মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। চলমান এহেন পরিস্থিতির স্থায়ী সমাধান ও অবসান প্রয়োজন। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে উদ্যোগী হতে হবে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ইসি। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যগণ ভোটকেন্দ্রসমূহের পারিপার্শ্বিক শৃঙ্খলাসহ প্রার্থী, ভোটার, নির্বাচনী কর্মকর্তাসহ সর্বসাধারণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। কোনো প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে জাল ভোট, ভোট কারচুপি, ব্যালট ছিনতাই, অর্থের লেনদেন ও পেশিশক্তির সম্ভাব্য ব্যবহার কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। তথ্য প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রার্থিতা তাৎক্ষণিক বাতিল করা হবে। কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, সকলের সমন্বিত সহযোগিতার মাধ্যমেই কেবল নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হয়ে থাকে। রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচনে কার্যকরভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে, নির্বাচন অধিক পরিশুদ্ধ ও অর্থবহ হয়। তাতে জনমতেরও শুদ্ধত্বর প্রতিফলন ঘটে। সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন সাধারণত পাঁচ বছর অন্তর অন্তর হয়ে থাকে। প্রজাতন্ত্র বিধায় জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সরকার দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনার অনিবার্য আবশ্যকতা রয়েছে। তাই নির্ধারিত সময়ে ও নির্ধারিত পদ্ধতিতে সংসদের সাধারণ নির্বাচন আয়োজনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তা- কর্মচারীগণ এবং আইন-শৃঙ্খলা-রক্ষাকারী বাহিনীসমূহের সহায়তা নিয়ে এ আয়োজন সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। সরকার আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক এবং শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে সুস্পষ্ট প্রতিশ্রুতি বারবার ব্যক্ত করেছে। তিনি বলেন, আমরা আগ্রহী সকল রাজনৈতিক দল, বুদ্ধিজীবী সমাজ, শিক্ষাবিদ, নাগরিক সমাজ, সিনিয়র সাংবাদিক এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে একাধিকবার সংলাপ ও মতবিনিময় করেছি। তাদের মতামত শুনেছি। সুপারিশ জেনেছি। আমাদের অবস্থানও ব্যাখ্যা করেছি। নির্বাচনে অনাগ্রহী নিবন্ধিত সকল রাজনৈতিক দলকেও সংলাপে একাধিকবার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমন্ত্রণে তারা সাড়া দেননি। নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছি।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন