৪ বছরের ছেলেকে মেরে স্যুটকেসে ভরে পালাচ্ছিল মা
কথায় বলে- ‘ কুপুত্র যদি বা হয়, কুমাতা কখনও নয়।’ কিন্তু এ কথাটি যেন এবার বদলে গেলো।
সম্প্রতি ভারতের কর্ণাটকে ঘটেছে এমন এক ঘটনা যা শুনলে শিউরে উঠতে হবে সকলকেই। ৩৯ বছর বয়সি এক মহিলা নিজের ৪ বছরের ছেলেকে খুন করে ছোট্ট দেহটি ব্যাগে ভরে গোয়া থেকে চলে গিয়েছিলেন কর্নাটকে!
জানা গেছে, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্টার্ট-আপ সংস্থা মাইন্ডফুল এআই ল্যাবের সিইও সূচনা শেঠকে সোমবার (৮ জানুয়ারি) কর্নাটকের চিত্রদুর্গ থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোয়ার ক্যান্ডোলিমের একটি অ্যাপার্টমেন্টে নিজেরই ছেলেকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে সূচনার বিরুদ্ধে।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) উত্তর গোয়ার ক্যান্ডোলিমের একটি বিলাসবহুল রিসর্টে ছেলেকে নিয়ে চেক-ইন করেন সূচনা। সোমবার তিনি একা রুম থেকে চেক আউট করেন এবং হোটেল কর্মীদের বেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য একটি ট্যাক্সি বুক করতে বলেন। ফ্লাইটে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া সত্ত্বেও তিনি ট্যাক্সি নেয়ার জন্য জোর দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন রিসর্টের কর্মীরা।
রিসর্টের কর্মীরা খেয়াল করেন, মহিলার সঙ্গে তার ছেলে নেই। এরপর যখন তার ঘরে যান, সেখানে রক্তের ছাপ পাওয়া যায়। সন্দেহ হতেই তারা গোয়া পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পুলিশের তরফে ট্যাক্সি ড্রাইভারের মারফত যোগাযোগ করা হয় সূচনা শেঠের সঙ্গে। তখনও গাড়িতেই ছিলেন সূচনা। তাকে ছেলের ব্যাপারে প্রশ্ন করতেই মহিলা জানান, তার ছেলে এক বন্ধুর সঙ্গে তার বাড়িতে রয়েছে। এরপর পুলিশকে তিনি একটি ঠিকানা দেন। কিন্তু খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, সেটি একটি ভুল ঠিকানা।
এরপর পুলিশ আবার ট্যাক্সি চালককে ডেকে তার সঙ্গে কথা বলে। সূচনা যাতে তাদের পরিকল্পনার কথা বুঝতে না পারেন, তার জন্য কোঙ্কনি ভাষায় কথা বলে গোয়া পুলিশ ড্রাইভারকে গাড়িটি নিয়ে বলে চিত্রদুর্গার নিকটস্থ থানায় যেতে বলে। চালক সেখানে যেতেই গ্রেফতার করা হয় সূচনাকে। তাঁর সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকেই পাওয়া যায় ৪ বছরের ছেলের মৃতদেহ।
পুলিশ জানিয়েছে, মহিলার স্বামী পেশায় একজন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ডেভেলপার। ২০১০ সালে সূচনার সঙ্গে তার বিয়ে হলেও ২০২০ সালে তাদের বিচ্ছেদ হয়ে যায়। তবে ছেলে কার কাছে থাকবে তা নিয়ে মামলার রায়ে আদালত জানিয়েছিল, বাবার সঙ্গে রোববারগুলোয় দেখা করতে দিতে হবে ছেলেকে। সেটাই পছন্দ ছিল না সূচনার। গেলো রোববার স্বামীর সঙ্গে ছেলের দেখা হওয়ার কথা ছিল। তা আটকাতেই ছেলেকে খুন করেন তিনি। মহিলার স্বামীকে খবর দেয়া হয়েছে। তিনি এসে পৌঁছলে শিশুটির মৃতদেহ ময়নাতদন্তে জন্য পাঠানো হবে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সূচনাকে।
মাইন্ডফুল এআই ল্যাবের লিঙ্কডইন হ্যান্ডেল থেকে জানা গেছে, সূচনা শেঠ ২০২১ সালের এআই এথিক্সে সেরা ১০০ জন মহিলাদের মধ্যে ছিলেন। তার লিঙ্কডইন অ্যাকাউন্ট থেকে জানা গেছে, তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টারের একজন কর্মী। এছাড়া ডেটা সায়েন্স টিমকে পরামর্শ দেয়ার, স্টার্ট-আপ ল্যাবগুলিতে মেশিন লার্নিং সলিউশন স্কেলিং করার ১২ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে তার।