ইউক্রেনে সামরিক সহায়তা দেবে যুক্তরাজ্য
ইউক্রেনকে আড়াই বিলিয়ন পাউন্ড সামরিক সহায়তা দিবে যুক্তরাজ্য। আগামী অর্থবছর এপ্রিল থেকে কার্যক্রম শুরু হবে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) রুশ আক্রমণের পর সবচেয়ে বড় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক সহায়তার নমুনা উল্লেখ করে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা বলেন, ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, বিমান প্রতিরক্ষা ও আর্টিলারি শেল সরবরাহ করা হবে। বলা হয়েছে, ড্রোনের জন্য প্রায় ২ হাজার লাখ পাউন্ড ব্যয় করা হবে, যার বেশির ভাগই যুক্তরাজ্যে তৈরি করা হবে।
ইউক্রেনের জন্য ঘোষণা করা সামরিক প্যাকেজের পরিমাণ উল্লেখ করে কর্মকর্তারা বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তা দেয়া যে কোনও দেশের তুলনায় এই প্যাকেজ বড়। এটি সবচেয়ে বেশি ড্রোন সরবরাহের প্যাকেজ। ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে ইউক্রেন সফরে গিয়ে একটি বড় সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছিলেন, ইউক্রেনের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার জন্য একটি নতুন চুক্তি করা হবে।
এই চুক্তিতে বিভিন্ন ধরনের সামরিক অস্ত্র থাকবে। এদিকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র দিমিত্রি মেদভেদেভ হুমকি দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা মিত্রদের সরবরাহ করা অস্ত্র দিয়ে যদি রাশিয়ার অভ্যন্তরে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপণকেন্দ্রে হামলা চালায় ইউক্রেন, তাহলে মস্কোর পক্ষ থেকে পারমাণবিক হামলার ঝুঁকি তৈরি হবে। বৃহস্পতিবার তিনি এই হুমকি দেন।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে দেশটির প্রভাবশালী নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকা দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন, পশ্চিমাদের সরবরাহকৃত দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনীয় কয়েক জন সামরিক কমান্ডার রাশিয়ার অভ্যন্তরে ক্ষেপণাস্ত্র উেক্ষপণকেন্দ্রে হামলার কথা ভাবছেন। ইউক্রেনীয় কমান্ডারদের নাম বা কথিত হামলার পরিকল্পনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছু তিনি বলেননি।
টেলিগ্রামে মেদভেদেভ লিখেছেন, এর অর্থ কী? এর অর্থ একটাই। আর তা হলো রাশিয়ার পারমাণবিক নীতির ১৯ অনুচ্ছেদ সক্রিয় করা, যা পারমাণবিক প্রতিরোধের ক্ষেত্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রনীতি।
তিনি লিখেছেন, এই কথা মনে রাখতে হবে। রাশিয়ার ২০২০ সালের পারমাণবিক নীতির ১৯ অনুচ্ছেদে কয়েকটি পরিস্থিতির বর্ণনা রয়েছে। যেসব পরিস্থিতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বিবেচনা করতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে কোনো পারমাণবিক হামলা বা গণবিধ্বংসী অস্ত্র অথবা প্রচলিত অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে রাশিয়ার অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে তা মোকাবিলায় পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার।
মেদভেদেভ তার মন্তব্যে নির্দিষ্টভাবে যে অনুচ্ছেদের কথা বলেছেন তাতে প্রচলিত অস্ত্রের হামলার জবাবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের বিষয় উল্লেখ রয়েছে। রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সিদ্ধান্ত পুতিনের হাতে ন্যস্ত। কিন্তু কূটনীতিকরা বলছেন, মেদভেদেভের মতো ক্রেমলিনের যুদ্ধবাজ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত তুলে ধরে। যারা মনে করেন, পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে রাশিয়া অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াই করছে।
ক্রেমলিনের সমালোচকরা অতীতে মেদভেদেভের পারমাণবিক হুমকিকে আমলে নেননি। তাদের মতে, মনোযোগ আকর্ষণের জন্য বা ইউক্রেনে অস্ত্র সরবরাহ পশ্চিমাদের নিরুত্সাহিত করতে এমন হুমকি দিচ্ছেন তিনি।