আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস, গ্রেপ্তার ৬

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাসের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে  একজন বিসিএস ক্যাডারসহ ৬ জন গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।  তবে এখনও গোয়েন্দা সংস্থা সেসব নাম প্রকাশ করেনি। এ বিষয়ে ডিবির সন্দেহের তীর যার দিকে তিনি মাউশির শিক্ষা কর্মকর্তা চন্দ্র শেখর হালদার। আর খোদ শিক্ষাভবনের কর্মকর্তা প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার ঘটনায় থমথমে অবস্থায় রয়েছে শিক্ষাভবন।

মাউশির একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই ঘটনার পর থেকেই ওই শিক্ষা কর্মকর্তা অফিস করছেন না। তিনি ছুটিতে আছেন। তবে আজ বৃহস্পতিবার থেকে মাউশিতে একটি খবর চাউর হয়েছে, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা এই কর্মকর্তাকে বুধবার রাতে আটক করেছে আইনশৃংখলা বাহিনী। এমন খবরে অনেকেই এ বিষয়ে তাদের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে এমন আতংকে ভুগছেন।

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে গত শুক্রবার ঢাকার ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা হয়। ৫১৩টি পদের জন্য পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ লাখ ৮৩ হাজার। রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে সুমন জোয়ার্দ্দার নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

অন্যদিকে এই কেন্দ্রের দায়িত্বে ছিলেন চন্দ্রশেখর হালদার। তার সঙ্গী ছিলেন মাউশির কর্মচারী বেলাল। তবে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কিভাবে ও কখন ফাঁস হয়েছে তা নিয়ে অনেকের মধ্যেই মতভেদ রয়েছে।

নিয়ম অনুসারে একটি পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্ব একজন নির্বাচনী প্রিজাইডিং কর্মকর্তার মতো হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে ওএমআর পত্র ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে জমা দিতে হয়। এরপর আনুসাঙ্গিক যা থাকে তা মূল পরিচালনা কেন্দ্রে জমা দেয়ার পর সেখান থেকে ওই কর্মকর্তাকে রিলিজ করা হয়। এর মধ্যে কিছু হলে তার দায়ভার সম্পূর্ণ কর্মকর্তার উপর বর্তায়।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাউশির ওই শিক্ষা কর্মকর্তার প্রশ্নপত্র নিয়ে রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজ কেন্দ্রে যাওয়ার কথা ছিল। তিনি অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রশ্নপত্র নিয়ে যাওয়ার পথে তা ফাঁস করেন। পরে চক্রের সদস্যরা প্রশ্নপত্র সমাধান করে নির্ধারিত চাকরি প্রার্থীদের মুঠোফোনে পাঠিয়েছিলেন।

সূত্রের দাবি ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করলে তা জানা যাবে। তবে চন্দ্র শেখর হালদারকে আটক বা গ্রেপ্তারের বিষয়টি এখন পর্যন্ত নাকচ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ।

এর আগে বুধবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (উপমহাপরিদর্শক পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) হারুন অর রশীদ বলেছেন, মাউশির ওই কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করা গেলে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত পুরো চক্রের সন্ধান পাওয়া যাবে।

পটুয়াখালীর খেপুপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গণিত শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে গত সোমবার রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাইফুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর টিকাটুলী ও ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩৪তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রাশেদুল ইসলাম, মাউশির উচ্চমান সহকারী আহসান হাবিব ও অফিস সহকারী নওশাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের প্রত্যেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন