তথ্য-প্রযুক্তি

প্রিয় শিল্পীর কণ্ঠে পছন্দের গান শোনাবে ইউটিউব এআই

প্রিয় শিল্পীর কণ্ঠে নিজের পছন্দের গান শুনতে আসছে ইউটিউব এআই ফিচার। এই প্রযুক্তির ব্যবহারে ব্যবহারকারীর নির্দেশ অনুযায়ী প্রিয় শিল্পীর কণ্ঠে গান তৈরি করবে ইউটিউব। ফিচারটির নাম 'ড্রিম ট্র্যাক'।

ব্যবহারকারীরা একজন পছন্দের শিল্পীকে বেছে নিয়ে সর্বোচ্চ ৫০ অক্ষরের নির্দেশনা দিতে পারবেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইর সাহায্যে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেই নির্দেশনা অনুসারে ওই শিল্পীর কণ্ঠে গাওয়া একটি গান তৈরি হয়ে যাবে। আপাতত ডেমি লোভাটো, জন লেজেন্ড, চার্লি এক্সসিএক্স, টি-পেইন, চার্লি পুথ, সিয়ার মতো শিল্পীদের কণ্ঠে গান তৈরি করা যাচ্ছে। এই ফিচারটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে।

ইউটিউব বাছাইকৃত ১০০জন ইউটিউবারকে এই ফিচারটি অগ্রিম ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছে। ড্রিম ট্যাক দিয়ে তৈরি গান শুধু ইউটিউব শর্টসে শেয়ার করা যাবে। টিকটকের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকে থাকতে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতে 'শর্টস' নামের ছোট দৈর্ঘ্যের ভিডিও শেয়ারিং ফিচার চালু করে ইউটিউব। এরপরের বছর মার্চে যুক্তরাষ্ট্রে এবং পরে সারা বিশ্বে এই ফিচারটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

ড্রিম ট্র্যাক দিয়ে তৈরি দুটো গানের নমুনা প্রকাশ করেছে ইউটিউব। বোদ্ধাদের মতে, চার্লি পুথ ও টি-পেইনের কণ্ঠ ব্যবহার করে তৈরি গানগুলো শুনতে মোটামুটি ভালো হলেও এগুলোকে শিল্পীদের নিজেদের তৈরি করা গানের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গানগুলোর মান খারাপ হলেও শিল্পীদের স্টাইল বোঝা যাচ্ছে।

এক ব্লগ পোস্টে ইউটিউবের মিউজিক বিভাগের প্রধান বলেছেন, শিল্পী ও দর্শকদের 'প্রতিক্রিয়া বোঝা, শেখা ও তাদের পরামর্শ শোনার' জন্য এই ফিচারটি তৈরি করা হয়েছে।

যেসব নির্বাচিত ইউটিউবারকে এই ফিচারটি ব্যবহারের অগ্রিম সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাদের একজন ক্লিও আব্রাম। তার তৈরি ভিডিওতে দেখা গেছে, তিনি প্রথমে শিল্পী হিসেবে চার্লি পুথকে বাছাই করেছেন এবং কয়েক শব্দে তার কুকুরকে নিয়ে একটি গান তৈরির নির্দেশনা দিয়েছেন। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গানটি তৈরি হয়ে যায় এবং কণ্ঠ অনেকটাই পুথের মতোই। শিল্পীদের কাছ থেকেই অনুমতি নিয়েই ইউটিউব এই উদ্যোগ নিয়েছে।

ইউটিউব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো ভিডিও প্রদর্শনের আগে দর্শককে সতর্কবার্তা দেবে বলে নিশ্চিত করেছে। ড্রিম ট্র্যাক ফিচার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে গতানুগতিক কোনো ভিডিও বা গান তৈরির ফিচার নয়, কারণ এখানে যেসব শিল্পীদের কণ্ঠ ব্যবহার করা হচ্ছে, তারা সবাই এজন্য সরাসরি অনুমতি দিয়েছেন।

তবে এই ফিচারের ঘোষণা সৃজনশীল কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে চলমান বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে। এ ধরনের অনেক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুলকে কপিরাইট করা কনটেন্টের সাহায্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাকে শিল্পীর সৃজনশীলতার 'অন্যায্য ব্যবহার' হিসেবে বর্ণনা করেন অনেকে।

ইতোমধ্যে জনাথন ফ্রানজেন, জোডি পিকোল্ট এবং জর্জ আর. আর. মার্টিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রশিক্ষণে তাদের কপিরাইট করা কনটেন্ট ব্যবহারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

শিল্পী চার্লি এক্সসিএক্স বলেন, ইউটিউব যখন প্রথম এই বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করে, তখনও আমি সতর্ক ছিলাম, এখনো আছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিশ্ব এবং সঙ্গীত শিল্পকে এমনভাবে রূপান্তরিত করতে যাচ্ছে যা আমরা এখনও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারিনি। সৃজনশীল খাতে এআই প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা কেমন, তা এই পরীক্ষার মাধ্যমে কিছুটা বোঝা যেতে পারে। আমি এর ফলাফল দেখতে চাই।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন