আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

গরমে ওজন থাকুক নিয়ন্ত্রণে

প্রবল গরমের দিনেও শরীর ফুরফুরে রাখতে সঠিক ডায়েট আর সামান্য লাইফস্টাইলের পরিবর্তনই যথেষ্ট। আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে, গরমকালে যেহেতু কম তেল-মশলাযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হয়, তাই গরমকালে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম। আসলে চিত্রটা কিন্তু অন্যরকম। 

গরমকালে আমরা হালকা খাবার খাই ঠিকই, তবে তাতে ক্যালরির খুব বেশি তারতম্য হয় না। এছাড়া বিয়েবাড়ি আর অন্যান্য অনুষ্ঠান তো রয়েছেই। পাশাপাশি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সারাদিন আমরা যেসব চিনিযুক্ত পানীয় গ্রহণ করি, সেগুলো দৈনন্দিন ক্যালরির পরিমাণে যোগ করলে বুঝবেন আসলে শরীরের লাভ কিছুই হচ্ছে না। 

একজন মানুষের খাদ্যাভ্যাস যেমনই হোক না কেন, সামান্য কিছু ডায়েট প্ল্যানিংয়ে সহজেই এ গ্রীষ্মকালীন ‘ওয়েটগেন’ আটকাতে পারেন। আপনার চারপাশে যে ধরনের ফুড চয়েস রয়েছে, তার মধ্যে থেকে স্বাস্থ্যকর অপশন খুঁজে বের করতে চেষ্টা করুন। এমন খাবার যা আপনি আগে কখনও খাননি অথচ পুষ্টিকর, সেরকম খাবার ট্রাই করতে পারেন। এতে স্বাদবদলও হবে আর পুষ্টিরও অভাব হবে না। এছাড়া কিছু সহজ উপায় মেনে চলা যেতে পারে।

সপ্তাহের শুরুতেই যদি গোটা সপ্তাহের একটা মোটামুটি মেনু প্ল্যান করে নেয়া যেতে পারে, তাহলে খুব ভাল হয়। ধরুন কোনওদিন যদি রাতে অনুষ্ঠান থাকে বা কোথাও খেতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকে, সেক্ষেত্রে সেদিন দুপুরে হালকা স্যুপ বা স্যালাড খেতে পারেন। এতে অতিরিক্ত ক্যালরি ব্যালেন্স করতে পারবেন।

যেখানেই খান, চেষ্টা করুন বেসিক হেলদি রুলস মেনে চলতে। কম তেলের খাবার, অতিরিক্ত সবজি এবং ফল, সম্পূর্ণ সবুজ খাবার ইত্যাদি খেতে চেষ্টা করুন। তবে ভুলেও পেট খালি রাখবেন না।

কোনও অনুষ্ঠান বা নিমন্ত্রণ থাকলে চেষ্টা করুন সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ আগে অল্প কিছু খেয়ে নিতে। এতে পেট খানিকটা ভর্তি থাকবে। ফলে তেল-মশলাযুক্ত খাবারও কম খাওয়া হবে।

সস, মেয়োনেজ, ক্রিমযুক্ত স্যুপ, ভারি সালাদ ইত্যাদি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। 

সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাবারের খুব ভাল কম্বিনেশন হল সি-ফুড। এতে প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল সবই পর্যাপ্ত পরিমাণে পাবেন। স্টার ফ্রায়েড বা ভাপানো সি-ফুড খেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন যেন তাতে অতিরিক্ত সোডিয়ামযুক্ত সস না থাকে।

গরমকালে আইসক্রিম, ঠাণ্ডা পানীয় ইত্যাদি খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে ডাবের জল, ফ্লেভারড ওয়াটার কিংবা ফ্রোজ়েন ইয়োগার্ট বাছতে পারেন। সারাদিন প্রচুর পানি খান। যে কোনও মিলের আগে এক গ্লাস পানি খাওয়াল অভ্যেস করুন।

হালকা স্যান্ডউইচ, মাল্টিগ্রেন বিস্কুট, ফল ইত্যাদি সঙ্গে রাখুন। টুকটাক খিদে পেলে রাস্তার ধার থেকে কেনা খাবারের তুলনায় এগুলো অনেক নিরাপদ অপশন।

অ্যাক্টিভ থাকুন। প্রত্যেকদিন যে জিমে গিয়ে ঘণ্টাখানেক কাটাতেই হবে, এমনটা নয়। অফিসে সিটে বসে না থেকে পায়চারি করা কিংবা অল্প দুরত্বের পথ পায়ে হেঁটে গেলেও কিছুটা ব্যায়াম হবে।

এ ছোট ছোট অভ্যেসগুলো তৈরি করলে শরীর থাকবে তরতাজা এবং ওজনও থাকবে নিয়ন্ত্রণে।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন