আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের শ্রদ্ধায় সিক্ত আবদুল গাফফার চৌধুরী

কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আনা হয়েছে কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ। 

আজ শনিবার (২৮ মে) বেলা ১১টার দিকে মরদেহবাহী বিমানটি হযরত শাহজালাল (রাহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

সরকারের পক্ষ থেকে মরদেহ গ্রহণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

বিমানবন্দর থেকে দুপুর ১টা ৮ মিনিটের দিকে আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহ শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয়। পরে দুপুর ১টা ১৩ মিনিটে গার্ড অব অনার দেয়া হয় তাকে।

এরপর জাতীয় পতাকা আবৃত মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপস্থিত বিশিষ্ট নাগরিকরা। পরে সর্বস্তরের জনতা ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তাকে।

আবদুল গাফফার চৌধুরীর মরদেহের দাফনসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার সঙ্গে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও জাতীয় প্রেসক্লাব সার্বিক সহযোগিতা করছে। 

দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহিদ মিনারে রাখা হবে গাফফার চৌধুরীর মরদেহ।  বিকাল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে জানাজা দেয়া হবে। বিকাল ৪টায় মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে জাতীয় প্রেসক্লাবে।  সেখানে জানাজা শেষে বিকাল সাড়ে ৫টায় গাফফার চৌধুরীর শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর কবরের পাশে সমাহিত করা হবে দেশ বরেণ্য এ সাংবাদিককে।

আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী গেলো ১৯ মে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান। ২০ মে তার প্রথম জানাজা ইংল্যান্ডের ব্রিকলেন মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সেখানকার আলতাব আলী পার্কের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

যুক্তরাজ্যপ্রবাসী স্বনামধন্য এ সাংবাদিক স্বাধীনতাযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক জয় বাংলার প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।

১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল গাফফার চৌধুরী। তার বাবা হাজী ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন। ১৯৫০ সালে গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময়ে তিনি ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। মহিউদ্দিন আহমদ ও কাজী আফসার উদ্দিন আহমদ তখন ‍‘দৈনিক ইনসাফ’ পরিচালনা করতেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন। এরপর তিনি বহু পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হন।

সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশি’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে ‘একজন তাহমিনা’ ‘রক্তাক্ত আগস্ট’‘ ও পলাশী থেকে বাংলাদেশ’।

অনন্যা চৈতী

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন