নরসিংদী রেলস্টেশনে তরুণী হেনস্তায় জড়িত সেই নারী গ্রেপ্তার
নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে তরুণী হেনস্তার ঘটনায় মূল হোতা শিলা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। রোববার (২৯ মে) রাতে শিবপুর উপজেলা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার (৩০ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ নরসিংদীর ক্যাম্প কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান।
ওই নারী নরসিংদী সদরের উপজেলা মোড় এলাকার মার্জিয়া আক্তার। তিনি পেশায় একজন ঘটক।
মবিন খান জানান, ওই মহিলা একেক জায়গায় একেক নাম-পরিচয় ব্যবহার করতেন। ফলে শিলা, শায়লা নামে পরিচিত তিনি। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম মার্জিয়া আক্তার।
গেলো ১৮ মে ঢাকা থেকে দুই যুবক ও এক তরুণী নরসিংদীতে বেড়াতে আসেন। ট্রেন থেকে নেমে তারা স্টেশনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় এক মহিলা তাদের পোশাক দেখে বাজে ও নোংরা মন্তব্য করেন।
একপর্যায়ে স্টেশনের স্থানীয় বখাটেসহ ওই মহিলা তদের মারধর শুরু করেন এবং মেয়েটির পোশাক ধরে টানাটানি করেন। এ সময় তার সঙ্গে থাকা দুই তরুণকেও মারধর করতে দেখা যায় ঘটনাস্থলে থাকা কয়েকজন ব্যক্তিকে। পরে তারা নিরুপায় হয়ে স্টেশন মাস্টারের রুমে আশ্রয় নেন।
পরে ভুক্তভোগী তরুণী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯–এ ফোন দিলে নরসিংদী মডেল থানা পুলিশ রেলস্টেশনে এসে তাদের ঢাকার ট্রেনে উঠিয়ে দেয়।
ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। হেনস্তাকারীদের শাস্তির দাবি জানান তারা।
এরপর সিসিটিভির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে গেলো ২০ মে রাত ৯টার দিকে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে মো. ইসমাইলকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাকে ভৈরব রেলওয়ে থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়। পরের দিন শনিবার বিকেলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে তোলা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান এবং এই ঘটনায় মামলার নির্দেশ দেন।
পরে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী। মামলায় মো. ইসমাইল ও শিলা ওরফে মার্জিয়া আক্তারের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও একজন নারী ও ৮-১০ জন পুরুষকে আসামি করা হয়।
গত সোমবার মো. ইসমাইলকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সবশেষ রোববার দিবাগত রাতে নরসিংদীর শিবপুর এলাকায় বোনের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার হন মার্জিয়া আক্তার।