জাতীয়

অবৈধভাবে আর একজনকেও ঢুকতে দেয়া হবে না : বিজিবি প্রধান

সীমান্তে উদ্ভূত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি তৎপর আছে। সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বিজিবির নিয়ন্ত্রণে আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে ধৈর্য ধারণ করে, মানবিক থেকে এবং আন্তর্জাতিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছে বিজিবি। পরিস্থিতি যা–ই হোক না কেন, অবৈধভাবে আর একজনকেও বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হবে না। বলেছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বিজিবি মহাপরিচালক নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেন। মহাপরিচালক সীমান্তে দায়িত্বরত বিজিবি সদস্যদের খোঁজখবর নেন ও তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘এ পর্যন্ত প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ঢুকে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন ২৬৪ জন। তাঁদের আমরা বাসস্থান, খাবার ও নিরাপত্তা দিচ্ছি। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত আটজনের মধ্যে চারজন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ও চারজন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘গত দুই দিনের তুলনায় আজকে (বুধবার) গোলাগুলির পরিমাণ একটু কম। এর আগে গোলাবারুদ, মর্টার শেল আমাদের দেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। এ জন্য সরকারের সব পর্যায় কাজ করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিজিবি সদস্যদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন এবং স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সব ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কথা হয়েছে। পত্রালাপ হচ্ছে। যারা আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে, মিয়ানমার তাদের নিয়ে যেতে প্রস্তুত। যত দ্রুত সম্ভব নিয়ে যেতে বলেছি। আমরা আশাবাদী, শিগগিরই এর একটি সমাধান হবে।’

আশ্রিত ব্যক্তিদের মধ্যে দুজন নারী ও দুটি শিশু আছে জানিয়ে বিজিবি প্রধান বলেন, ‘তাদের নিরাপত্তাটুকু নিশ্চিত করার দায়িত্ব, মানবিক কারণে এবং আন্তর্জাতিক রীতি ও সুসম্পর্ক রাখার কারণে আমরা করছি। আপনারা দেখছেন এই অংশটি (ঘুমধুম) সীমান্তের একদম কাছে। সাধারণ জনসাধারণের জন্য জায়গাটুকু আসলে নিরাপদ নয়। বিশেষ করে যখন গোলাগুলি শুরু হয়, তখন তো একদমই নয়। প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে অনুরোধ করতে হবে। এটা স্বাভাবিক যে নিজের বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র থাকা সুখকর নয়। তবে নিজের জীবন রক্ষার জন্য যখন এ ধরনের পরিস্থিতি হয় তখন এতটুকু করতেই হবে।’

এটি সম্পূর্ণ মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ গোলযোগ এবং সংঘাত মন্তব্য করে মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ‘এটার কারণে আমরা প্রতিবাদলিপিও দিয়েছি। এটা বন্ধ করতে বলেছি, যাতে কোনো ধরনের ফায়ার আমাদের বর্ডারের ভেতরে না আসে। সে কারণে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কঠোর বার্তা দিয়েছে। এরপরও যদি আবার গোলাগুলি শুরু হয়, জনসাধারণ যেন নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে পারে। আমরা আর কোনো মৃত্যু চাই না। আমরা এ পরিস্থিতির আশু সমাধান চাই।’

এএম/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন