পাকিস্তানের নির্বাচনে তদন্তের আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
পাকিস্তানের নির্বাচনে ‘জালিয়াতির’ অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একমত যে, ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে বাক স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণভাবে সমবেত হবার অধিকার অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ব্যাহত করা হয়েছে।
শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার গণমাধ্যম কর্মীদের উপর আক্রমণসহ নির্বাচনে সহিংসতা, মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের উপর বিধিনিষেধ, ইন্টারনেট ও টেলিযোগাযোগের উপর বিধিনিষেধের নিন্দা জানান।
মিলার বলেন, ‘নির্বাচন প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। হস্তক্ষেপ বা জালিয়াতির অভিযোগ সার্বিকভাবে তদন্ত করে দেখতে হবে। আমরা প্রত্যাশা করছি, পাকিস্তানের জনগণের মতামত সম্বলিত পূর্ণ ফলাফল সময়মত প্রকাশ করা হবে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতিতে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক এবং নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান সমুন্নত রাখার জন্য দেশের নির্বাচনী কর্মী, সুশীল সমাজ, মিডিয়া কর্মী এবং নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশংসা করা হয়।
মিলার বলেন, ‘রেকর্ড সংখ্যক নারী, ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘু আর তরুণ এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। যে দলই ক্ষমতায় আসুক, যুক্তরাষ্ট্র পরবর্তী সরকারের সাথে অভিন্ন স্বার্থ নিয়ে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে পাকিস্তানের অর্থনীতিকে উন্নত করার লক্ষ্যে আমাদের অংশিদারিত্ত আরও জোরদার করা হবে। পাকিস্তানের জনগনের যে শান্তি, গণতন্ত্র এবং সমৃদ্ধি প্রাপ্য, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নিরাপত্তা বিষয়ে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।’
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী— এখন পর্যন্ত ২৫০ আসনের ফলাফল পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯৯ আসনে জয় পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের মধ্যে বেশির ভাগই পিটিআই, অর্থাৎ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সমর্থিত। ৭১ আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দল। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির দল পিপিপি রয়েছে তৃতীয় অবস্থানে। তার দল পেয়েছে ৫৩ আসন। এছাড়া এমকিউএম ১৭ আসনে এবং অন্যান্য দল ১০টি আসনে জয়ী হয়েছে।
জানা গেছে, পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের মোট আসনসংখ্যা ৩৩৬টি। এর মধ্যে ২৬৬ আসনে সরাসরি ভোট হয়। ৭০টি আসন সংরক্ষিত। এসব আসনের মধ্যে ৬০টি নারীদের ও ১০টি সংখ্যালঘুদের। ২৬৬ আসনের একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী গুলিতে নিহত হওয়ায় সেখানে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। ভোটগ্রহণ হয়েছে ২৬৫ আসনে।
দেশটির মসনদে কারা বসছেন সেটি এখনও পরিষ্কার হয়নি। ইমরান খানের দল সরকার গঠন করতে চাইলে কারও সঙ্গে জোট করতে হবে। সেটি কীভাবে হবে এবং শেষ পর্যন্ত কাদের হাতে ক্ষমতা আসবে সেটি জানতে অপেক্ষা করতে হবে।