আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

সালিশের নামে গৃহবধূকে লাঠি পেটা

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সালিশের নামে গৃহবধূকে লাঠি পেটা করার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত গৃহবধূকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গেলো শুক্রবার (৩ জুন)  এ ঘটনায় ভুক্তভোগির স্বামী বাদী হয়ে রাতে চারজনের নাম উল্লেখ করে গোবিন্দগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলার সাপমারা ইউনিয়নের কৌচাকৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ওয়ায়েছ কুরুনির সঙ্গে একই ইউনিয়নের ভেলামারি গ্রামের আব্দুল করিমের মেয়ে কাওছার আক্তার কাকুলির প্রায় ১২ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুজন মেয়ে সন্তানও রয়েছে। কিন্তু বেশ ৩/৪ মাস যাবৎ ওই ইউনিয়নের কোগারিয়া গ্রামের দোজা মিয়ার ছেলে মাহাবুর রহমান (২৮) গৃহবধূ কাওছার আক্তার কাকুলির মোবাইল ফোনে ফুসলিয়ে নানা প্রলোভন দিয়ে দৈহিক মেলামেলা  করে লম্পট মাহবুর।

একপর্যায়ে কাকুলি বেগমকে গত সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পূর্বের ন্যায় অসৎ উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোনে বাড়ীর পাশে যেতে বলে মাহবুর। কাকুলি বেগম বাড়ীর বাহিরে বের হলে একই গ্রামে রাসেল মিয়া (৩২), তোতা মিয়া (২৫) ও শামিম মিয়া (৩০) অসৎ উদ্দেশ্যে গৃহবধূ কাকুলি বেগমের হাত ধরে টানাটানি করে। এসময় ওই গৃবধূর চিৎকারে স্বামী ওয়ায়েছ কুরুনিসহ আশ-পাশের লোকজন ছুটে গিয়ে রাসেল মিয়া, তোতা মিয়া ও শামিম মিয়াকে ধরার চেষ্টা করলে তারা পালিয়ে যায়।

ঘটনার বিষয়ে সাপমারা ইউনিয়ন পরিষদ আদালতে স্বরণাপন্ন হলে দুদিন ব্যাপি সালিশ বৈঠকের একপর্যায়ে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে আবারো সালিশ বৈঠক বসে। বৈঠকে ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল লম্পট মাহাবুর রহমানকে চর-থাপ্পড় মারে এবং ভরা মজলিসে লাঠি দিয়ে কাকুলি বেগমের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথারিভাবে আঘাত করে ছেলা-ফোলা বেদনাদায়ক জখম করে। এতে কাকুলি বেগম গুরুতর অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগি কাকুলি বেগমের স্বামী ওয়ায়েছ কুরুনি বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে মাহাবুর রহমান, রাসেল মিয়া, তোতা মিয়া ও শামিম মিয়ার নামে অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে, মামলা না করতে চেয়ারম্যানের লোকজন অভিযোগের বাদী ওয়ায়েছ কুরুনিকে হুমকি-ধুমকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে ভুক্তভোগি পরিবারটি।      

অভিযোগকারী ওয়ায়েছ কুরুনি বলেন, বিচারের নামে অপরাধীকে বাঁচানো হয়েছে। আর চেয়ারম্যান আমার স্ত্রীর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তিনি।

এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইজার উদ্দিন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন