আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

ঢাকার আশেপাশের নদী দূষণে দায়ী ওয়াসা

ঢাকার আশপাশের চারটি নদীর দূষণে যদি কোনো একক প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করা হয়, তাহলে সেটি হবে ঢাকা ওয়াসা।  ঢাকার যত মলমূত্র যত আছে, তার ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশই এ চার নদীতে যায়। এটা কীভাবে যায়। ওয়াসার দায়িত্ব ছিল এসবের সমাধান করা। বলেছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। 

আজ শনিবার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, রাজধানী থেকে একই পাইপ দিয়ে মলমূত্র ও বৃষ্টির পানি নদীতে গিয়ে পড়ে। অথচ ওয়াসার দায়িত্ব ছিল টয়লেটের ময়লাসহ পানি এবং গোসলখানাসহ অন্যান্য লাইনের পানি পৃথকভাবে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। সেটা তারা করেনি। ফলে দ্রুত নদী দূষণ হচ্ছে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। পানির অপর নাম জীবন। অথচ এখন এ পানিই আমাদের জন্য মরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গেলো মার্চ মাসে তিনি ঢাকার উত্তরে নদী সফর করে খুঁজেছেন কোথায় গেলেএমন একটা নদী পাবেন যেখানে মানুষ গোসল করছে। রাজধানী থেকে ৯৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সুতিয়া নদী নামে গোসল করার মতো একটা নদী পাওয়া গেলেও সেখানে গিয়ে জানা গেল ঐ নদীতে আকিজ ফ্যাক্টরি তাদের বর্জ্য ফেলায় সেটিও দূষিত হয়ে পরছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকাসহ চারপাশে প্রায় চার কোটি মানুষের বসবাস। তাদের জন্য কোনো একটা নদী বা জলাশয় নেই, যেখানে কেউ গোসল করতে পারে। এটাও এক ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন। ঢাকার চারপাশে এসব নদীতে কোনো ঝিনুক নেই, মাছ নেই, নেই কোনো মাছরাঙা পাখি বা চিল। এখন নদীতে পাওয়া যাচ্ছে সাকার ফিশ। এসব নদীতে সাকার ফিশ বাঁচতে পারে তার কারণ তারা পানি থেকে অক্সিজেন নেয় না। জলের উপরে সাকার ফিশ ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বাঁচতে পারে। এ থেকে নদীগুলোর অবস্থা কী দাঁড়িয়েছে, তা সহজেই বুঝা যায়।

ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, পরিবেশ দূষণের কারণেই আজ ডায়রিয়া বা কলেরায় আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এসব পানি এখন কলেরার উৎস।

আয়োজক সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি ড. সুলতান আহমেদ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন