ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদে কিশোরকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৫
ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় নিরব নামে এক কিশোরকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। ঘটনাটি ঘটেছে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে। ঘটনার ছয় ঘণ্টার মাথায় শনিবার অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- শাহীন সিকদার (১৬), রোমান মৃধা (১৭), রায়হান (১৭), জাহিদ (১৭) ও আবির (১৭)।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১০ এর সহকারী মিডিয়া পরিচালক ও সহকারী পুলিশ সুপার এম.জে. সোহেল।
তিনি জানান, গেলো ৮ ফেব্রুয়ারি মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর এলাকার মৃত জব্বা আলীর ছেলে গাজী দিল হোসেন নিরব (১৭) কামারগাঁও আলহাজ্ব কাজী ফজলুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যায়। সেই অনুষ্ঠানের এক পর্যায় কয়েকজন বখাটে এক ছেলে এক ছাত্রীকে ধাক্কা দেয় এবং বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। বিষয়টি দেখে নিরব প্রতিবাদ করলে উত্ত্যক্তকারী বখাটে ছেলেরা নিরবের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং বিভিন্ন প্রকার গালাগালি করতে থাকে। তাৎক্ষণিক বিষয়টি মিমাংসা করে দেন উপস্থিত ব্যক্তিরা। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বখাটেরা নিরবের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে উচিৎ শিক্ষা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।
এম.জে. সোহেল জানান, ঘটনার ধারাবাহিকতায় ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নিরব প্রাইভেট পড়া শেষ করে শ্রীনগরের কামারগাঁও চৌধুরী বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উত্তর পার্শ্বের স্কুলে ভবনের সিঁড়িতে বসে তার বন্ধুদের সাথে গল্প করছিল। ওই সময় শাহীন, রোমান, রায়হান, জাহিদ ও আবির ওই ইভটিজিংকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তাদের সাথে থাকা আরও ২০-২১ জন সহযোগীদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্র (দা, চাপাতি ও চাকু) নিয়ে নিরবের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। এ সময় তারা দা, চাপাতি ও চাকু দিয়ে নিরবের মাথা, বুক, পিঠ ও পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কুটিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে তারা। নিরব প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে সেই স্কুলের রাস্তার পাশে একটি খালের মধ্যে পড়ে যায়। এরপর হত্যাকারীরা নিরবের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, পরে স্থানীয়রা নিরবকে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিরবকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিরবের মা মোসা. দিলারা ওরফে নিপা আক্তার বাদি হয়ে মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর থানায় জড়িত শাহীন, রোমান, রায়হান, জাহিদ ও আবিরসহ ১৯ জনসহ আরও অনেককে অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা করেন।
গ্রেপ্তারদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।