আর্কাইভ থেকে বাংলাদেশ

‘মামা আমার কলিজার টুকরা মেয়েটাকে একটু দেখে রাখিও’

‘আমার কলিজার টুকরা মেয়েটার মুখ আর দেখা হবে না মামা। তুমি একটু দেখে রাখিও।’ মৃত্যুর আগে মামা মির হোসেনকে ফোন করে এসব কথা বলেছিলেন কুমিরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নার্সিং অ্যাটেনডেন্ট কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান (৩২)।  আগুন নেভানো ও বিস্ফোরণের ঘটনায় ২৬টি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম কাজ করছে। 

শনিবার (৪ জুন) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনারের ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ঘটনায় রাত ১১ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে গিয়ে মারা যান তিনি। 

মৃত্যুর আগে ভাগনের বলা কথাগুলো উচ্চারণ করে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করেন মামা মির হোসেন। তার আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ। মির হোসেন হাসপাতালে এসে ভাগনের মরদেহ শনাক্ত করেন। মনির আট বছর আগে ফায়ার সার্ভিসে কর্মজীবন শুরু করেন। গেল দুই মাস আগে তিনি কুমিরা ফায়ার স্টেশনে যোগ দেন। দুই মাস বয়সী এক কন্যাসন্তান রয়েছে তার।

আজ রোববার (৫ জুন) আট ফায়ার সার্ভিসকর্মীসহ এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৪৫০ জন। কনটেইনার ডিপোতে লাগা আগুন এখনও জ্বলছে। এদিকে হাসপাতাল এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালেও মারা গেছেন কয়েকজন এবং চট্টগ্রাম মেডিকেলে দগ্ধ হয়ে ভর্তি আছেন ১৫০ জন।
 
সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহাদাত হোসেন জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণ ও উদ্ধার অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২০০ সদস্যের একটি টিম সকাল থেকে কাজ শুরু করেছে।

সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের আরবান সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ টিমের প্রধান আরিফুল ইসলাম হিমেল বলেন, সকাল থেকে (রোববার) আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছি। এখনো পুরোপুরি নেভেনি। কিছু কনটেইনারে এখনো আগুন জ্বলছে।

ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে হতাহতদের জন্য নগদ এক কোটি টাকা সহায়তা ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার কারণ জানতে তদন্ত কমিটি গঠন বরা হয়েছে।

বিএম ডিপোর ঘটনা তদন্তে টার্মিনাল ম্যানেজারকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। এই কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

 

এসআই/

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন