দেশেই তৈরি হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের ডেন্টাল সরঞ্জাম
কাড়ি কাড়ি ডলার খরচ করে ডেন্টাল ইউনিটের উপকরণ সামগ্রী আমদানীর আর প্রয়োজন হবেনা।দেশেই তৈরি হচ্ছে দাঁতের চিকিৎসার বিভিন্ন সরঞ্জাম।এসব সরঞ্জামের গুণগতমান আমদানীকৃত সরঞ্জামের চেয়ে অনেক ভালো ও টেকসই। খরচও তুলনামূলক অনেক কম।এসব সরঞ্জাম দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে স্মার্ট ডেন্টাল সেক্টর প্রতিষ্ঠায় সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই এই শিল্প হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম খাত। কর্মসংস্থান হতে পারে হাজারো মানুষের।
রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে আয়োজিত বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেন্টাল এক্সিবিশন ও মিটিংয়ের সমাপনী দিনে ডেন্টাল চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্পের উদ্যোক্তা, চিকিৎসক ও ক্রেতারা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের ডেন্টাল শিল্পের বা সেক্টরের শতকরা ৯৯ ভাগ উপকরণই বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। এতে একদিকে দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে এসব সরঞ্জাম কিনতেও বেশী অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এসব চিন্তা করেই দেশের মাটিতেই ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় উপকরণ উৎপাদন শুরু করেছেন বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তা।
ফিক্সগ্রিন ডেন্টাল সাপ্লাই এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের স্বত্বাধিকারী ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাকারিয়া আহমদ বায়ান্ন টিভিকে এবিষয়ে বলেন, ‘দাঁতের কিচিৎসায় সর্বপ্রথম যেটির প্রয়োজন হয় তা হচ্ছে ডেন্টাল ইউনিট। এই প্রধান উপকরণটাই আমরা উৎপাদন করতেছি। যদি বিদেশি কোম্পানিগুলোর প্রোডাক্টের সঙ্গে তুলনা করা হয় তাহলে অলমোস্ট ওদের যে ফ্যাসিলিটিজ তার সবই আমরা এই ইউনিটে দিচ্ছি। কিন্তু মূল্য এত অল্প যে ওদের থেকে শতকরা ৬০-৭০ ভাগ লোয়ার মূল্যে আমরা প্রেডাক্টটা দিতে পারতেছি।‘
ডেন্টাল ইউনিটের বাংলাদেশি পণ্য বিদেশে রফতানির প্রচুর সুযোগ আছে বলেও জানান মেলায় অংশগ্রহণকারী তরুণ এই উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, `আমাদের ডেন্টাল ইউনিট মূলত আমদানী নির্ভর। ডেন্টালের সবকিছু শুরু হয় এই ইউনিট দিয়ে। চীনের সঙ্গে যদি তুলনা করেন তাহলে আমাদের উৎপাদিত প্রোডাক্ট কোনো অংশেই কম নয়। আমি আমাদের কোম্পানির একটি চেয়ারের কথাই ধরি। আমাদের এখানে খরচ অনেক কম। উৎপাদন খরচও স্বল্প। শ্রমও সস্তা। তাই বিদেশ থেকে কোনো চেয়ার যে টাকায় কিনে আনা হয় তার অনেক কম মূল্যেই এটা আমাদের কাছ ক্রেতারা নিতে পারেন। এভাবে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।
মেলার অন্যতম আয়োজক প্রতিষ্ঠান এমএমএম ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী আকতার হোসেন বায়ান্ন টিভিকে বলেন, বাংলাদেশ ডেন্টাল মার্চেন্ডাইজ ট্রেডার্স এসাসিয়েশন-বিডিএমটিএ আয়োজিত আন্তর্জাতিক এই প্রদর্শনীতে ডেন্টাল চেয়ার, ডেন্টাল পরীক্ষার যন্ত্র, ডেন্টাল ইমপ্লান্ট মেশিন, বৈদ্যুতিক অস্ত্রোপচার যন্ত্র, আলট্রাসাউন্ড স্কেলেল, অর্থ্রোপ্যাথিনির্নয় ও চিকিৎসা সরঞ্জাম, মূল খাল দৈর্ঘ্য পরিমাপ যন্ত্র, রুটখাল থেরাপি নির্ণয়ক মোটরসহ একটি ডেন্টাল ইউনিটের প্রয়োজনীয় সব উপকরণই প্রদর্শন করা হয়। ৫০টিরও বেশি দেশের তৈরি ডেন্টাল পণ্যের পাশাপাশি এই মেলায় একমাত্র বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ফিক্সগ্রিন ডেন্টাল সাপ্লাই অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পণ্যসামগ্রী প্রদর্শন করা হয়ে।’
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার ১৬ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ডেন্টাল এক্সিবিশন ও মিটিংয়ের ষষ্ঠ আসর শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এই মেলার উদ্বোধন করেন।