জাতীয়

একুশে ফেব্রয়ারি নিয়ে যা বললেন পিটার হাস-সারাহ কুক

একুশে ফেব্রুয়ারি শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস নয়। এটি বিশ্বের প্রতিটি ভাষার আত্মরক্ষার প্রতীক-এমন মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। আর এদিনটি ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে উৎসাহিত ও সম্মানিত করে জানিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার জানালেন, তিনি উৎসাহ নিয়ে নিজেই বাংলা বলা, পড়া ও লেখা শিখছেন।

বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে উদযাপিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাংলাদেশে এদিনটি মহান শহীদ দিবস হিসেবেও উদযাপিত হচ্ছে। ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স ডেনমার্কের দূতাবাস এবং যুক্তরাজ্য ও ভারতীয় হাইকমিশন দিবসটি উদযাপন করছে। বিভিন্ন দূতাবাস ও হাইকমিশনের পক্ষ  থেকেও দেওয়া হয়েছে শুভেচ্ছা বক্তব্য।

২১ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। দূতাবাসের ফেসবুকে দেওয়া এক পোষ্টে বলা হয়, আজ, একুশে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আমরা পৃথিবীর সব ভাষার সমৃদ্ধি ও বৈচিত্র্যকে উদযাপন করছি। আসুন সবাই মিলে এমন একটি বিশ্ব গড়ে তুলি যেখানে প্রতিটি ভাষা সম্মানিত ও উদযাপিত হবে।

আর দূতাবাসের ফেসবুকে দেওয়া একটি ভিডিও বার্তায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকলকে আমি আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই।  দিনটিতে সেইসব সাহসী বাংলাদেশিদের স্মরণ করা হয় যারা বাংলাভাষায় পড়া, লেখা ও কথা বলার  অধিকার আদায়ের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আর দিনটি সারা বিশ্বের প্রতিটি ভাষার জন্য আত্মরক্ষার প্রতীক।’

আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে ভিডিও বার্তায় বাংলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক। ব্রিটিশ হাইকমিশনের ফেসবুক পেইজে পোস্ট করা ওই  ভিডিও বা্র্তায় তিনি বলেন, ‘এবছর বাংলাদেশে থেকে আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস উদযাপন করতে পেরে আমি আনন্দিত। এদেশেই এই দিবসটির উৎপত্তি হয়েছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, আমি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ঠিক সামনে দাড়িয়ে আছি যেখানে ১৯৫২ সালে মার্তৃভাষা বাংলার জন্য প্রাণ দেওয়া শহীদদের স্মরণ করা হয়।’

ওই ভিডিয়ে পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস হচ্ছে ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে সম্মান  ও উৎসাহিত করা। আমি বাংলাদেশের যেখানেই যাই সেখানে এই  স্পিরিটটি দেখতে পাই।  এই দিনে আমি মার্তৃভাষায় কথা বলতে পেরে নিজেকে গর্ববোধ করি। আমি দুইটি মহান দেশের ভাষাগত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে লালন করি। আমি সত্যিই উৎসাহ নিয়ে বাংলা বলা, পড়া ও লেখা শুরু করে দিয়েছি। সবাইকে আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা।’

আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে বার্তা দিয়েছেন ঢাকায়  নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার মান্টিটস্কি। ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস প্রবর্তনে বাংলাদেশের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।  আজ আমাদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, আমাদের মার্তৃভাষাগুলো কতটা মূল্যবান। আধুণিক প্রজন্ম যাতে করে নিজেদের মার্তৃভাষা বলতে পারে জানতে পারে তার জন্য কী ত্যাগ স্বীকার করতেদ হয়েছিলো।’

ওই পোস্টে তিনি আরও বলেন,‘‘কূটনীতিকরা একে অপরের মার্তৃভাষার গুরুত্ব সম্পর্কে ভালভঅবে জানেন। আপনি যদি আপনার বিদেশি প্রতিপক্ষকে আরও ভালভাবে বুজতৈ চান-তাহলে তার ভাষা শিখতে হবে। বিভিন্ন দেশে ও অঞ্চলে কাজ করার মাধ্যমে আমরা অনেক ভাষার মুখোমুখি হয়েছি। সেখানে আমরা দেখতে পেয়েছি-ভাষাগত বৈচিত্র্য না থাকলে বৈশ্বিক সমাজের সাংস্কৃতিক কাঠামো সমতল ও নিস্তেজ হয়ে যাবে।’

ঢাকায় নিযুক্ত সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেক্সান্দ্রা বার্গ ফন লিন্ডেও আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে বাঙলাদেশের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এছাড়া, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, চীনের দূতাবাস ও ভারতীয় হাইকমিশনের পক্ষ থেকেও আন্তর্জাতিক  মার্তৃভাষা দিবসের শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন