সন্ত্রাসীদের হামলায় বুরকিনা ফাসোয় নিহত অন্তত ১০০
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোয়ার উত্তরাঞ্চলীয় একটি গ্রামে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলায় অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন। ভয়াবহ এ হামলায় নিহতরা সবাই বেসামরিক নাগরিক।
আজ মঙ্গলবার (১৪ জুন) আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স আফ্রিকার এ দেশটির নিরাপত্তা সূত্র-সহ আরও দুইটি সূত্রের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, সশস্ত্র আক্রমণকারীরা গেলো শনিবার (১১ জুন) ও রোববারে (১২ জুন) মধ্য বুরকিনা ফাসোর সেনো প্রদেশের সেতেঙ্গা এলাকায় রাতের আঁধারে হামলা চালায়। এরপরই সেখানে পুরুষদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। তবে হামলাকারীরা নারী ও শিশুদের ওপর হামলা চালানো থেকে বিরত ছিল।
রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, হামলার দায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। বিদ্রোহীদের হামলার শিকার এ এলাকাটি সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত, যেখানে আল-কায়েদা এবং আইএসআইএল এর সঙ্গে সম্পৃক্ত যোদ্ধারা সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে থাকে।
অবশ্য সশস্ত্র বিদ্রোহীদের হামলায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বিবরণ পাওয়া যাচ্ছে। আফ্রিকার এ দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা গেলো সোমবার (১৩ জুন) রয়টার্সকে বলেছেন, হামলায় অন্তত ১০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অন্যদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, হামলার পর মৃতের প্রাথমিক সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬৫ জনে।
অন্যদিকে বুরকিনা ফাসোর সরকারের মুখপাত্র লিওনেল বিলগো গেলো সোমবারে বলেছেন, এখন পর্যন্ত ৫০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহতের সংখ্যাটি চূড়ান্ত নয়।
তিনি আরও বলেন, সৈন্যরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মরদেহ খুঁজছে। আর তাই মৃতের সংখ্যা আরও ‘বাড়তে পারে’।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলা মোকাবিলায় রীতিমতো সংগ্রাম করছে বুরকিনা ফাসো। সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা এবং আইএস’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া গত এক দশকে আফ্রিকার এই দেশটিতে সহিংসতা অনেক বেড়েছে এবং জোরালো হয়েছে। আর এতে প্রতি বছর হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বুরকিনা ফাসো, নাইজার এবং মালির বিস্তৃত এলাকাজুড়ে জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়েদা এবং ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে সম্পর্কিত জিহাদিদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফলে পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল থেকে কয়েক মিলিয়ন সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ি-ঘর থেকে উচ্ছেদ হয়েছেন। এসব হামলা ও সহিংসতায় নিহত হয়েছেন হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ।