ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে পঞ্চগড়ে বেড়েছে সরিষা চাষ
ভোজ্য তেলের চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাহিদার অধিকাংশ পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। ভোজ্য তেলের একটি বড় অংশ পূরণ হয়ে থাকে সরিষার তেলের মাধ্যমে। তাই সরিষার চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় পঞ্চগড় জেলায় সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থকরী ফসল হিসেবেও কৃষকেরা সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। এ মৌসুমের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখন সরিষার হলুদের সমাহার। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এখন চাষিরাও ঝুকছেন সরিষা চাষে। যে জমিতে আগে দুই ফসল চাষ হতো এখন সেই জমিতে সরিষা চাষ করে তিনটি ফসল আবাদ হিসেবে সরিষার চাষ যুক্ত হয়েছে। এতে আর্থিক ভাবে স্বচ্ছলতা ফিরে পাচ্ছেন জেলার প্রান্তিক সরিষা চাষিরা। দুই ফসলের জমিতে তিন ফসল চাষের আওতায় আনার লক্ষে কৃষকদের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে,পঞ্চগড় জেলার কৃষকেরা সরিষা চাষে এগিয়ে এসেছেন। বর্তমানে প্রত্যন্ত অঞ্চল সরিষার হলুদ ফুলের গন্ধে মুখরিত। জেলার ৫টি উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দেখা মিলছে হলুদের মাঠ। বাতাসের দোল খাচ্ছে কৃষকের হলুদ স্বপ্ন। এই বিশাল ক্ষেতগুলোতে আগে দুইটি ফসল আবাদ করা হলেও কৃষি বিভাগের পরামর্শে এবার নতুন করে সরিষা চাষের মাধ্যমে তিন ফসল আবাদের আওতায় আনা হয়েছে। আর কম খরজে লাভজনক ফসল হওয়ায় চাষিরাও ঝুকছেন এই চাষে। রোগবালাই ছারাই ফলন হয়েছে বাম্পার। তাই সরিষা চাষ করে সফলতার পথ খুঁজে পেয়েছেন প্রান্তিক চাষীরা। প্রতি বিঘায় খরচ হয় প্রায় ৪- ৫ হাজার টাকা, আর সরিষা হয় প্রায় সাড়ে ৬-৭ মন, যার বাজার মূল্য হবে ৩৫-৪০ হাজার টাকা। কম খরচে লাভ জনক ফসল হওয়ায় এখন দিন দিন বাড়ছে এর চাষ। জেলার বোদা উপজেলার বোদা সদর ইউনিয়নের বোসপাড়া গ্রামের সরিষা চাষী রবিউল ইসলাম জানান, আমন ধান উত্তলোনের পর বোরো লাগানোর আগ পর্যন্ত প্রায় ৩ মাস জমি ফেলে না রেখে সরিষা চাষ করা হচ্ছে। এই চাষে ঝুকি ও খরচ কম, লাভ বেশি।
পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহা আলম মিয়া জানায়, জেলায় এবার ৯ হাজার ৬শ ৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে ,যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর বেশি। এর মধ্যে দেবীগঞ্জ ও বোদা উপজেলায় বেশি চাষ হয়েছে। দুই ফসলী জমিতে তিন ফসল চাষের আওতায় আনার লক্ষে সরিষা চাষ যুক্ত হয়েছে। চাষিদের পরামর্শ সহ উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সরিষা চাষে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হয়। তিনি জানান, দেশে চাহিদার বিপুল পরিমাণ ভোজ্য তেল আমদানী করতে হয়। উন্নত জাতের ভাল বীজ সরবরাহ, সময় মত বীজ বপন, সার ও সেচ প্রয়োগের সুযোগের সৃষ্টি ও কৃষি বিভাগের অধিকতর তদারকির মাধ্যমে সরিষার ফলন বাড়ানো গেলে দেশ ভোজ্য তেলের চাহিদার বিরাট অংশ পুরণ করা সম্ভব হবে।