বাংলাদেশ

জিম্মি জাহাজ ও নাবিক উদ্ধারে যেভাবে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে

ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়েছে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটির মালিক কবির স্টিল রোলিং মিলস (কেএসআরএম) মালিকানাধীন। ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল এই কোম্পানির আরেকটি জাহাজ (এমভি জাহানমণি)। সেসময় ২৬ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। ১০০ দিন পর তাদের মুক্ত করে এনেছিল কোম্পানি। ফলে এবারও পূর্বের সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায় বলে জানিয়েছে কবির গ্রুপ।

গেলো মঙ্গলবার (১৩ মার্চ) মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জাহাজটিকে অপহরণ করে প্রায় শতাধিক সোমালিয়ান সশস্ত্র জলদস্যু। জাহাজের ২৩ বাংলাদেশি নাবিককেও জিম্মি করে রেখেছে তারা।

কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বুধবার (১৩ মার্চ) গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার পর থেকে প্রথমে নাবিকদের সুরক্ষার বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি। জলদস্যুরা নাবিকদের কোনো ক্ষতি করেনি। তারা সুস্থ আছেন। জাহাজে নাবিকদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, এটি নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই। এ রকম ঘটনা অহরহ ঘটে থাকে। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতাও আছে। আমরা আশা করছি, অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নাবিক ও জাহাজটি ফিরিয়ে আনতে পারবো। প্রয়োজনে মধ্যস্থতা সংস্থা ও ব্রিটিশ বীমা কোম্পানির সহায়তা নেয়া হবে।

এদিকে জাহাজের প্রধান কর্মকর্তা মো. আতিকউল্লাহ খান এক অডিও বার্তায় মঙ্গলবারই জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের কাছে জাহাজে কী পরিমাণ খাবার ও পানি আছে এসব তথ্য জানিয়েছেন। জাহাজটি জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে নেয়ার পর পরই তাদের এ বার্তা পাঠান তিনি।

আতিকউল্লাহ খান অডিও বার্তায় বলেন, আমাদের জাহাজে ২০–২৫ দিনের রসদ (খাবার) আছে। ২০০ টন বিশুদ্ধ পানি আছে। আর জাহাজে রয়েছে ৫৫ হাজার টন কয়লা। রসদ যাতে দ্রুত ফুরিয়ে না যায়, সে জন্য অপ্রয়োজনে ব্যবহার না করার জন্য সবাইকে জানানো হয়েছে।

জাহাজটির মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কবির গ্রুপের কর্মকর্তাদের সঙ্গে জলদস্যুরা এখনও যোগাযোগ করেনি। এ হিসেবে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত এই খাবার দিয়ে চলতে হবে জাহাজের নাবিক ও দস্যুদের।

যুক্তরাজ্যের মেরিটাইম ট্রেড অপারেশন (ইউকে এমটিও) তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল পূর্বে এ ঘটনা ঘটেছে। দুটি নৌযানে (একটি বড় এবং আরেকটি ছোট) চড়ে জাহাজটির কাছাকাছি এসে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। ইউকে এমটিও সমুদ্রে চলাচলকারী অন্য জাহাজগুলোতে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করতে বলেছে।

জানা গেছে, জলদস্যুদের কবলে পড়া বাংলাদেশি জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাঁচার আকুতি জানিয়ে এরইমধ্যে অডিও বার্তা দিয়েছেন জিম্মিরা।

এনএস/

 

 

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন