ঢালিউড

সাদি মহম্মদকে মোহাম্মদপুরে দাফন, নেয়া হবে না শহীদ মিনারে

না ফেরার দেশে চলে গেছেন কিংবদন্তি রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী ও সুরকার সাদি মহম্মদ। বুধবার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজ বাসায় তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। প্রাথমিকভাবে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা যাচ্ছে।

সাদি মহম্মদের মরদেহ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন তার ভাই শিবলী মহম্মদ। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বাদ যোহর মোহাম্মদপুর জামে মসজিদে জানাজা শেষে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানে তার দাফন হবে বলেও জানান তিনি।

বুধবার রাতে হাসপাতালে প্রথিতযশা নৃত্যশিল্পী শিবলী মহম্মদ জানান, মানুষের ভালোবাসা তার ভাই পেয়েছেন। এই যে এত মানুষ এখানে ছুটে এসেছেন, এটাই তার প্রতি সবার ভালোবাসা। মরদেহ শহীদ মিনারে নেওয়া হবে না। মরদেহ রাতে হিমঘরে রাখা হবে, সেখান থেকে সকালে আনা হবে।

বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাদি মহম্মদের মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ধানমন্ডিতে নেয়া হয়েছে। রাতেই আল মারকাজুলে তার গোসল সম্পন্ন হবে বলে পরিবারের সদস্যরা জানান।

তার মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করে নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নীপা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাদি মহম্মদ মারা গেছেন।

সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসঙ্গীতের ওপরে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার শ্রাবণ আকাশে ও ২০১২ সালে তার সার্থক জনম আমার অ্যালবাম প্রকাশিত হয়। এছাড়াও তিনি সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

সাদি মহম্মদ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে শহীদ পিতার সন্তান। তার বাবার নাম শহীদ সলিমউল্লাহ। ১৯৭১ সালে মোহাম্মদপুরের তাজমহল রোডের সি-১২/১০ বাড়িটি ছিল স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা সলিম উল্লাহর বাড়িতে নিয়মিত বৈঠকে আসতেন দলের শীর্ষ নেতারা, আসতেন বঙ্গবন্ধুপুত্র শহীদ শেখ কামালও।

একাত্তরের ২৩ মার্চ তাজমহল রোডের সেই বাড়িতে সেজ ছেলে সাদি মহম্মদের আঁকা বাংলাদেশের পতাকা ওড়ান বাবা সলিমউল্লাহ, সেই পতাকা সেলাই করে দিয়েছিলেন সাদি-শিবলীর মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ। সেই পতাকা ওড়ানোর সূত্র ধরে একাত্তরের ২৬ মার্চ অবাঙালি বিহারি ও পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠে সলিমউল্লাহর বাড়ি। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পুরো বাড়ি, গুলি করে মারা হয় সলিমউল্লাহকে। গত বছরের জুলাই মাসে সাদি মহম্মদের মা জেবুন্নেছা সলিমউল্লাহ মারা যান। এরপর থেকেই নাকি নানা কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন এই গুণী সংগীত শিল্পী।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন